মিটল না পানির পিপাসা, দেওয়ানবাজারে বিদ্যুৎ কেড়ে নিল শিশুর জীবন

পিপাসা মেটাতে পানি খেতে টিউবওয়েলে গিয়েছিল ৮ বছরের শিশু প্রীতম। কিন্তু সে পিপাসা আর মিটেনি। তার আগেই টিউবওয়েলে সংযুক্ত পাম্পমেশিনের শর্টসার্কিটের বিদ্যুৎ কেড়ে নিল নিষ্পাপ এ শিশুর জীবন প্রদীপ। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে, চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজার ভরাপুকুরপাড় হক বিল্ডিংয়ে।

ছেলের এমন আকষ্মিক মৃত্যুতে মা-বাবা ও প্রীতমের বোনদের আহাজারিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের সামনে তৈরি হয় এক বেদনাবিদুর পরিবেশ। বুক চাপড়িয়ে, আকাশ-বাতাস ফাটিয়ে আহাজারি করছেন মা রত্না দে আর বাবা উত্তম দে। তাদের সাথে প্রীতমের দুই বোনও কান্নায় ভেঙে পড়ে একমাত্র ভাইকে হারিয়ে।

জানা যায়, প্রীতম দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। তাদের বাড়ি বাঁশখালীর কালীপুরে। মৃত প্রীতমের মা রত্না দে জানান, আগে তারা দেওয়ানবাজার ভরাপুকুরপাড় এলাকায় হক বিল্ডিংয়ে থাকত। কিন্তু কিছুদিন আগে তারা অন্যত্র বাসা নিয়ে চলে যায়। তবে আগের জমিদারের বাসায় তাদের আসা-যাওয়া ছিল।

দুপুরে তার ছেলে প্রীতম খেলতে বের হয়ে হক বিল্ডিংয়ে পানি খেতে যায়। বিল্ডিংয়ের নীচে পাম্পমেশিন টিউবওয়েলের সাথে সংযুক্ত ছিল। পাম্পমেশিনের সাথে সংযুক্ত টিউবওয়েলটি শর্টসার্কিট হয়েছিল কেউই টের পায়নি।

প্রীতম পানি খাওয়ার জন্য টিউবওেয়েলটি চাপ দেওয়ার সাথে সাথেই বিদ্যুৎস্পৃস্ট হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। অজ্ঞান অবস্থায় ছেলেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তার জানান, তার ছেলে আর বেঁচে নেই।

মা রত্না দে জানান, দুই মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে প্রীতম ছিল মেঝ। তার স্বামী রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। ছেলেকে ছাড়া তিনি কিভাবে বেঁচে থাকবেন, বিলাপ করতে করতে বলেন রত্না দে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. হামিদুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞান অবস্থাতেই প্রীতম দে’কে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার দেখে তাকে ১৬ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠান। সেখানে ডাক্তার প্রীতমকে মৃত ঘোষণা করেন।

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!