মালামালের লোভে একদিনে জোড়া খুন

কাভার্ডভ্যান চালক সাগর ও হেলপার আলীর খুনীদের জবানবন্দী

কাভার্ডভ্যান ভর্তি মালামালের লোভেই চালক রিয়াদ হোসেন সাগর ও হেলপার মোহাম্মদ আলীকে খুন করেছিল খুনীরা। খুনীদের দলে ছিলেন মিরাজ হাওলাদার, আবু সুফিয়ান সুজন ও রবিউল হোসেন বাবু।

সাগর ও আলীর খুনের দায়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া মিরাজ হাওলাদার ও আবু সুফিয়ান সুজন শনিবার (৮ মে) মহানগর হাকিম হোসাইন মোহাম্মদ রেজার আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দী সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২ অক্টোবর এসিআই কোম্পানির গাড়ির যন্ত্রাংশ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কাভার্ডভ্যানটি যাচ্ছিল ঢাকার উদ্দেশ্যে। কাভার্ডভ্যানের চালক ছিলেন রিয়াদ হোসেন সাগর আর হেলপার মোহাম্মদ আলী। রিয়াদের হাতে ড্রাইভিং শেখা মিরাজ হাওলাদার আর আবু সুফিয়ান সুজন ঢাকা যাওয়ার কথা বলে তাদের আরেক সহযোগী রবিউল হোসেন বাবুসহ সিটি গেট থেকে কাভার্ডভ্যানে ওঠে।

কাভার্ডভ্যানটি জোরারগঞ্জ থানার কমলদহ এলাকায় গেলে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য যাত্রা বিরতি দেয়। খাওয়া শেষে গাড়িতে উঠলে বাবু ড্রাইভার ও চালককে ছুরিকাঘাত করে। মিরাজ তখন গাড়ি ঘুরিয়ে চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে আসতে থাকে।

তারপর সামনে এসে হেলপার আলীর দেহ তারা সড়কের পাশে পুকুরে ফেলে দেয়। কিন্তু আলী তখনো মারা না যাওয়ায় উঠে দাঁড়ান। তখন খুনিরা পুকুরে নেমে তার গলায় আবারও ছুরিকাঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

কাভার্ড্যভানের চালক সাগরের লাশ তারা বায়েজিদ লিংক রোডে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ওই সড়কে গাড়ি চলাচল বেশি থাকায় তারা টোল রোডে প্রবেশ করে হালিশহর থানা এলাকায় ফেলে দেয়। তার আগে সাগরের চেহারা থেতলে দিয়ে বিকৃত করে দেয়, যাতে কেউ চিনতে না পারে।

খুনিরা কাভার্ডভ্যানে গার্মেন্ট পণ্য আছে বলে নিশ্চিত হয়েছিল। কিন্তু তাদের সে আশায় হয় গুড়েবালি। মেশিনারিজ পণ্য থাকায় তারা কাভার্ডভ্যানটি বড়পুল এলাকার মনসুর মার্কেটের সামনে রেখে পালিয়ে যায়।

দুই থানার ভিন্ন স্থানে দুটি লাশ পাওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছিল। হালিশহর থানার মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে এই রহস্য উদঘাটন করে।

সাত মাস তদন্ত শেষে শুক্রবার (৭ মে) অভিযুক্ত মিরাজ হাওলাদারকে বন্দর এলাকার লেবার কলোনি থেকে এবং সুজনকে আকবরশাহ এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে।
শনিবার দুপুর ১২টায় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে গোয়েন্দা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার (বন্দর ও পশ্চিম জোন) ফারুক উল হক, অতিরিক্ত উপকমিশনার (বন্দর জোন) এএএম হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত উপকমিশনার (পশ্চিম জোন) মোহাম্মদ শাহেদ, পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকতাগণ উপস্থিত ছিলেন।

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!