মার্চেই চট্টগ্রামের লক্ষাধিক বাসাবাড়ি পাবে নতুন গ্যাস সংযোগ

বসবে ২ লাখ প্রিপেইড মিটারও

দীর্ঘ অচলাবস্থার পর পাইপলাইনের মাধ্যমে আবাসিকে (বাসা-বাড়ি) গ্যাস সংযোগের বাধা কাটতে যাচ্ছে অবশেষে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই এ ব্যাপারে দিয়েছেন সম্মতিও। সবমিলিয়ে অভ্যন্তরীণ কিছু প্রক্রিয়া শেষে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আগামী মাসেই নতুন গ্যাস সংযোগের দেওয়ার জন্য অনুমোদন মিলতে পারে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যেই নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু হবে। এদিকে গ্যাসের ২ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক কর্ণফুলী গ্যাস।

নতুন সংযোগ দেওয়া শুরু হলে চট্টগ্রাম অঞ্চলেই কেবল পুরনো ২৫ হাজার আবেদনকারী ছাড়াও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ পেতে পারেন লক্ষাধিক গ্রাহক।

২০০৯ সালের ২১ জুলাই থেকে শিল্প ও বাণিজ্যিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ করা হয়। এরপর ২০১০ সালের ১৩ জুলাই থেকে আবাসিকেও নতুন গ্যাস-সংযোগ বন্ধ করা হয়। ২০১৩ সালের ৭ মে আবাসিকে সংযোগ দেওয়া শুরু হলেও কিছুদিন পরই তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে নতুন গ্যাস সংযোগের ব্যাপারে কিছু তথ্য চেয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। তথ্যগুলো পাওয়ার পর আগামী মাসেই (ডিসেম্বর) নতুন গ্যাস সংযোগের দেওয়ার জন্য অনুমোদন মিলতে পারে। দরপত্র আহ্বানসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মার্চের মধ্যেই নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু হতে পারে।

সারাদেশে ছয়টি সরকারি কোম্পানি গ্যাস বিতরণ করে। এগুলো হলো কর্ণফুলী, তিতাস, পশ্চিমাঞ্চল, জালালাবাদ, বাখরাবাদ ও সুন্দরবন। সারাদেশে বৈধ আবাসিক গ্রাহক ৩৮ লাখ।

এর মধ্যে তিতাস গ্যাসের গ্রাহকই ২৭ লাখ। অন্যদিকে চট্টগ্রামে রয়েছে প্রায় ৬ লাখ আবাসিক গ্রাহক। এছাড়া চট্টগ্রামের ২৫ হাজার গ্রাহকের আবেদন জমা রয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কাছে।

চট্টগ্রামে প্রায় চার বছর আগে আবেদন করেও আবাসিক সংযোগসহ বর্ধিত চুলায় গ্যাস সংযোগ পাননি এই ২৫ হাজার গ্রাহক। এ নিয়ে কেজিডিসিএল ঠিকাদার ও গ্রাহক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিভিন্ন সময়ে সমাবেশ-অবস্থান ধর্মঘটের মতো কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।

জানা যায়, কেজিডিসিএল কর্তৃক অনুমোদন ও চাহিদাপত্র পাওয়ার পর গ্রাহকেরা ব্যাংকের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা জমা করেন। ছোট-বড় ভবন অনুযায়ী একেকজন গ্রাহক সর্বনিম্ন ২৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা দিয়েছেন। ২৫ হাজার গ্রাহক প্রায় ৩০ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন।

সম্প্রতি কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি—কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খায়েজ আহম্মদ মজুমদার বলেছেন, ‘নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত দাবিগুলো অতীব প্রয়োজনীয় এবং বাস্তবসম্মত। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে সত্যি। গ্যাস সংযোগ বন্ধের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য এবং গৃহস্থালি কাজে চট্টগ্রামবাসী দুর্ভোগের বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে অবগত। আপনারা অবগত আছেন প্রধানমন্ত্রী এবং অত্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় কেজিডিসিএল জনদুর্ভোগ লাঘবে নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশ্বাসও দিয়েছিলাম যে এলএনজি আমদানির পর আবাসিক অনাবাসিক এবং শিল্প কারখানার গ্যাস সংকট স্থায়ীভাবে সমাধান হবে।’

তিনি বলেন, কেজিডিসিএল নগরে ৬০ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপন করেছে। আরও ২ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিনের গ্যাস সংকট নিরসনে সাড়ে ৬ কোটি টাকার প্রকল্প ইতিমধ্যে অনুমোদন করা হয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!