মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় র‍্যাবসহ শীর্ষ ৭ কর্মকর্তা, পরিবারসহ দুজন ঢুকতেই পারবেন না

বিবৃতিতে এসেছে টেকনাফের একরাম খুনের প্রসঙ্গ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে বাংলাদেশ পুলিশের এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার খড়গ বসেছে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‍্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর। বেনজীর আহমেদ এর আগে র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ছিলেন। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাব ও এই সাত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‌্যাব-৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর ফলে তারা ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্যরা আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি পাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ কোনো সম্পদ থেকে থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা তাদের সঙ্গে লেনদেনও করতে পারবেন না।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় র‍্যাবসহ শীর্ষ ৭ কর্মকর্তা, পরিবারসহ দুজন ঢুকতেই পারবেন না 1

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে নিষেধাজ্ঞার এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলেছে, বাংলাদেশ সরকারের মাদকবিরোধী যুদ্ধে আইনের শাসন এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়ে মার্কিন স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে র‌্যাব।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় র‍্যাবসহ শীর্ষ ৭ কর্মকর্তা, পরিবারসহ দুজন ঢুকতেই পারবেন না 2

বেনজীর আহমেদ ও মিফতাহ উদ্দীন আহমেদ ছাড়া এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা র‌্যাবের অপর পাঁচ কর্মকর্তা হলেন বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বর্তমান অতিরিক্ত মহাপরিচালক খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খান।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর সরকারের নির্বাহী আদেশ ১৩৮১৮–এর আওতায় এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা এই আদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত ব্যক্তির সম্পদ বাজেয়াপ্তের কথা বলা হয়েছে।

মার্কিন রাজস্ব বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, র‌্যাবের বিরুদ্ধে ২০০৯ সাল থেকে ছয় শতাধিক গুম, ২০১৮ সাল থেকে প্রায় ছয় শতাধিক বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।

২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হককে তুলে নিয়ে হত্যার ঘটনা তুলে ধরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এরকম আরও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমদ এবং র‌্যাব-৭ এর তখনকার তখনকার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতা উদ্দিন আহমেদ জড়িত।

অন্যদিকে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার বিষয়ে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলেছে, ‘তারা র‌্যাবের নেতৃত্বে বা কর্মকর্তা হিসাবে আছেন বা ছিলেন। তাদের দায়িত্ব পালনের সময় র‌্যাব বা এর সদস্যরা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!