মাবিয়ার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরকে জেলে যেতেই হল ঋণের টাকা মারার মামলায়

চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান মাবিয়া গ্রুপের চেয়্যারমান জাহাঙ্গীর আলম (৫০) অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যাংক জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে অন্তত ৭০০ কোটি টাকা পাবে।

শনিবার (৬ নভেম্বর ) দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকা থেকে মাবিয়া গ্রুপের চেয়্যারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তর করে।

রোববার (৭ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমানের আদালত অন্যতম শীর্ষ এই ঋণখেলাপিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক মাদামবিবিরহাট শাখার ১০৭ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ৬২৬ টাকা ঋণখেলাপের এক মামলায় চট্টগ্রাম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত জাহাঙ্গীর আলমকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৭ কোটি টাকা জরিমানা করেন। কারাদণ্ড হওয়ার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

এর আগে গত ৩ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম মিলির দেশত্যাগে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক।

জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন মাবিয়া গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে জিলানী ট্রেডার্স, মাবিয়া শিপ ব্রেকার্স, মাবিয়া স্টিল কমপ্লেক্স, ব্রাদার্স ইস্পাত ইন্ডাস্ট্রিজ, এফএমএস ইস্পাত শিপ ব্রেকিং, আলী স্টিল এন্টারপ্রাইজ, খাজা আজমীর করপোরেশন এবং ফাহিম স্টিল রিং রোলিং মিলস ছাড়াও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান।

জানা গেছে, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড মাদাম বিবিরহাট শাখা থেকে মাবিয়া গ্রুপের নেওয়া ১০৭ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ৬২৬ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে ২০১৭ সালে একটি মামলা করা হয়।

চার বছর পর গত ৩ নভেম্বর মাবিয়া গ্রুপের কর্ণধার জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম মিলির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে ব্যাংকটির পক্ষে আবেদন করেন আইনজীবী জাহিদুল করিম।

আদালত শুনানি শেষে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দেশের স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন দিয়ে জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী যাতে পালাতে না পারেন সে জন্য দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশটি দেওয়া হয়।

জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের কদমরসুল এলাকায়।

জানা গেছে, মার্কেন্টাইল ব্যাংকই শুধু নয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেডের আগ্রাবাদ শাখা থেকেও মাবিয়া গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ফাহিম স্টিল রি-রোলিং মিলস, মাবিয়া স্টিল কমপ্লেক্স এবং ব্রাদার্স ইস্পাত ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেওয়া হয়।

এর মধ্যে ফাহিম স্টিল রি-রোলিং মিলসের কাছেই ফার্স্ট ফাইন্যান্সের সুদাসলে খেলাপি পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬৭ লাখ ২২ হাজার টাকা। ঋণের টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে ফার্স্ট ফাইন্যান্স। অন্যদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি মাবিয়া স্টিল কমপ্লেক্স থেকে পাবে ১৩ কোটি ৪৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা এবং ব্রাদার্স ইস্পাত ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে পাবে ২১ কোটি ১৫ লাখ ১১ হাজার টাকা।

এছাড়া বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, দি সিটি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক অন্তত ৭০০ কোটি টাকা পাবে মাবিয়া গ্রুপের কাছ থেকে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!