মাদক নয়, যুবসমাজের বাড়ছে পর্নোগ্রাফি আসক্তি : ঘটছে ইভটিজিং ও ধর্ষনের ঘটনা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে যুব সমাজের মাঝে মাদক নয়, বাড়ছে পর্নোগ্রাফি আসক্তি; যে কারণে জেলার ৬ উপজেলার প্রতিনিয়ত ঘটছে ইভটিজিং ও ধর্ষনের মত ঘটনা। প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে যুবসমাজের মাঝে অবাধে ছড়িয়ে পড়ছে পর্নোগ্রাফি এবং বাড়ছে আসক্তি।

ঝিনাইদহ জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকার কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানগুলোতে মোবাইল ফোনের মেমোরি কার্ড লোডের নামে অবাধে চলছে পর্নোগ্রাফি বিপণন ব্যবসা। যার ফলে সহজলভ্য হওয়ায় পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা। যার ফলসরুপ নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ ও নৈতিকতা। এ কারণে তারা  ইভটিজিং ও ধর্ষনের মত নানা সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ছে।

সরেজমিন ঘুরে এবং বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলাসহ শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, হরিণাকুন্ডু, মহেশপুর ও কোর্টচাঁদপুরে বিভিন্ন স্থানে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে মেমোরি কার্ডে পর্নোগ্রাফি আপলোড করা হচ্ছে। এসকল দোকানের সাইনবোর্ডে কম্পিউটার কম্পোজ, মেমোরি কার্ড লোড ও ডিজিটাল ছবি তোলার কথা লেখা থাকলেও এর আড়ালে অবাধে চলছে পর্নো ভিডিও সরবরাহের ব্যবসা। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেশি ও বিদেশি পর্নোগ্রাফি লোড করতে মেমোরি কার্ডে প্রতি জিবি ১০ হারে নেওয়া হচ্ছে। এসব পর্নোগ্রাফির পাত্র-পাত্রী হিসেবে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অভিনেতা ও অভিনেত্রী রয়েছেন। আর এ কারণে এসব পর্নোগ্রাফির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি।

বর্তমানে তরুণ ও যুবসমাজের একটি বৃহৎ অংশের কাছে এখন মাদকের নেশার চেয়েও বেশি ভয়ংকর হয়ে দেখা দিয়েছে পর্নোগ্রাফি সংরক্ষণ ও দর্শন করা। আর মাদকের চেয়ে সহজ লভ্য হওয়ায় এ নেশায় আক্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগ হারাছে। এছাড়া যুবসমাজের দ্রুত চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। বাড়ছে ইভটিজিং ও ধর্ষনের মত নানা ঘটনা। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েরাও জড়িয়ে পড়ছে নানা অসামাজিক কার্যকলাপে।

পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮/৩ ধারা অনুসারে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইট বা মোবাইল ফোন বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি সরবরাহ করলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন এবং উক্তরুপ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন।
কিন্তু কঠিন আইন থাকার শর্তেও আইন সম্পর্কে জনগণের সচেতনার অভাব এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকাতে দিন দিন পর্নোগ্রাফি সরবরাহের অপরাধ বেড়ে চলেছে।

সমাজের সচেতন অভিভাবকেরা জানান, এ অবস্থায় পর্নোগ্রাফি আইন সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এবং সে সাথে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানের নামে যে সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেমোরি কার্ড পর্নোগ্রাফি লোড দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে সমাজ থেকে  ইভটিজিং ও ধর্ষনের মত ঘটনা কমানো সম্ভব হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!