মাদকের উপর রচনা লিখতে মানা উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীদের

কক্সবাজারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রচনা প্রতিযোগিতায় উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না। সেই নির্দেশনা দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

এ দুই উপজেলার শিক্ষার্থীরা কেন অংশগ্রহন করতে পারবে না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি। এ নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা।

এটিকে অনেকে শিক্ষার্থীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ও বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে দেখছেন।

কক্সবাজারের সচেতন সমাজের দাবি, উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় সেখানে মাদকের ব্যাপকতা বেশি। যার কারণে ওই এলাকার মানুষকে মাদকের কুফল ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। সেখানকার শিক্ষার্থীদের যদি সচেতন করা যায় মাদকের ব্যাপকতা অনেকটাই কমে আসবে। সেটা না করে উল্টো তাদেরকে এই আয়োজন থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

জানা যায়, ২৬ মে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঘোষণা দেয় কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

‘মাদক গ্রহণের কুফল, মাদকাসক্তি প্রতিরোধে যুবসমাজের ভূমিকা এবং বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ’ এই তিন বিষয়ের উপর রচনা প্রতিযোগিতা হবে।

এ সংক্রান্ত এক চিঠিতে বলা হয় কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ ব্যতীত সকল ছাত্র-ছাত্রী রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী রচনা প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ।

বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়েছে, উখিয়া ও টেকনাফের শিক্ষার্থীরা রচনা প্রতিযোগিতায়া অংশগ্রহণ করতে পারবে না। পরে ওই বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত এরপর থেকে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে নানা শ্রেণীর মানুষ।

তারেক রহমান নামের একজন লিখেছেন, উপরের লেভেলের বড় বড় রাঘব বোয়ালরা মাদকে সংশ্লিষ্ট আছে জেনেছি। কিন্তু প্রকৃত লেখাপড়া করা শিক্ষার্থী ছেলে-মেয়েরা মাদকে জড়িত তা কখনো প্রমাণ মেলেনি। স্কুল-কলেজের পোশাক গায়ে মাদক কারবারিদের শিক্ষার্থী মনে করাও বোকামি। প্রকৃত শিক্ষার্থীদের উপর মাদকের প্রভাব ফেলে শিক্ষণীয় বিষয় থেকে তাদের বঞ্চিত করার অধিকার কারো নেই। এটি ষড়যন্ত্র। অনতিবিলম্বে এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার জোর দাবি জানাচ্ছি। এই কু-মনমানসিকতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

কক্সবাজার কলেজের শিক্ষার্থী হাসান উল্লাহ বলেন, ‘উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীরা কি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাইরে? মহিলা কলেজের মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের এ রকম বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

এ বিষয়ে জানতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিনের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

আরএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!