মাদকসেবনের প্রতিবাদ করায় সাংবাদিকের ওপর ছাত্রলীগের হামলা চুয়েটে

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) মাদকসেবনের বিরুদ্ধে কথা বলায় চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে হেনস্তা এবং সাংগঠনিক সম্পাদককে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির উপ গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আইদিদ আলমের নেতৃত্বে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল এই হামলা চালায়।

এ ঘটনার বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) চুয়েট সাংবাদিক সমিতি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডোপ টেস্ট ও শারীরিক নির্যাতনকারী তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায়।

এরপর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তারা জড়িতদের বহিষ্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দেয়।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম রব্বানী মাদকসেবনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তার লেখায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আইদিদের নেতৃত্বে প্রায় ১০ জনের একটি দল বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সমিতির সভাপতি জিওন আহমেদকে এবং সাধারণ সম্পাদক সায়েদ চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে ডেকে নেয়। তাদের চার ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে রেখে গালাগালি ও হেনস্তা করে। ভবিষ্যতে যদি এ ধরনের কোনো লেখালেখি করে, তাহলে তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে হুঁশিয়ার করে।

এরপর বিকাল ৪টার দিকে তারা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম রব্বানীকে ডেকে নেয়। প্রথমেই তার থেকে ফোন কেড়ে নেয় এবং হেনস্তা করতে থাকে। পরে মো. আইদিদ আলম, মো. ইমরান হাসান মুরাদ,শেখ নাহিয়ান তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে দিন দিন বেড়েছে মাদকসেবনের পরিমাণ। মাদকসেবীরা নিজেদের রুমে সেবন করেই বসে নেই, শহরগামী বাসগুলোতে জনসম্মুখে মাদকসেবন তাদের নিত্যদিনের কাজ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে লেখালেখি করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যাগ নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ছাত্রকল্যাণ দপ্তর, চুয়েটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বিষয়টি আশঙ্কাজনক। ফেসবুকে পোস্ট করা নিয়ে যেকোনো শিক্ষার্থীর ওপর এভাবে চড়াও হওয়া তাদের ঠিক হয়নি। গায়ে হাত তোলার মতো এমন কাজ করার অধিকার নেই তাদের।’

অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পরিচালক আরও বলেন, ‘আমরা ছাত্রকল্যাণ দপ্তর বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। আমি বিষয়টি ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে আজই অবগত করবো ৷ আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!