মাত্র ৩ সেকেন্ডেই মোবাইল হাওয়া করে ১২ বছরের এই কিশোর

কোন এক বিকেলে কুমিল্লার লাকসাম স্টেশনে থামা একটি ট্রেনে চড়ে চট্টগ্রাম শহরে আসে শিশু শরীফুল ইসলাম। এর কাছে ওর কাছে হাত পেতে কিছু টাকা জমা করে। খাওয়া-দাওয়াও চলতো খুঁজে নিয়ে, কখন কিছু টাকায় কিনে। ৫-৬ বছরের মাথায় এসে সেই ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুটি এখন চট্টগ্রাম রেলস্টেশন, নিউ মার্কেট এলাকার সবচেয়ে ও দক্ষ মোবাইল ছিনতাইকারীদের একজন। মাত্র তিন সেকেন্ডে সে গায়েব করতে পারে যে কারও মোবাইল সেট।

তবে এখন তার শরীফুল ইসলাম নামটি হারিয়ে গেছে তার ‘ঢাকাইয়্যা’ নামের আড়ালে। মোবাইল ছিনতাইয়ে ধরা পড়লে নিজের নাম সজীব বলেও পরিচয় দেয় কখনো কখনো। মাত্র ১২ বছর বয়সের ঢাকাইয়্যার কাছে ছিনতাই এখন নেশা এবং পেশাও। আগেরবার ছিনতাইয়ে ধরা খেয়ে গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে ছিল। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে দুই দিনের মাথায় আবার ছিনতাই করে আটক হয় পুলিশের হাতে।

আদালতের আদেশে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) শরীফুল ইসলাম সজীব ওরফে ঢাকাইয়্যাকে তার আরেক সহযোগী কুমিল্লা মুরাদনগরের মোতাহের হোসেনের ছেলে রনিসহ গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বুধবার (১৪ অক্টোবর) তাদের আটকের পর আদালতে সোপর্দ করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া এজাহার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে হালিশহর এলাকার বাসিন্দা আরজাহান আরজু আমতল থেকে নিউ মার্কেট মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে জহুর হকার্স মার্কেটের সামনে আসলে তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে তিন কিশোর তিন দিকে দৌঁড় দেয়। তিনি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে মোবাইল সেট উদ্ধারের পাশাপাশি ঢাকাইয়্যা ও রনিকে গ্রেপ্তার করে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে ছিনতাই হওয়ার পর থেকে রাতে উদ্ধারের আগ পর্যন্ত ১৭ হাজার টাকার মোবাইল সেটটি ছয় হাত বদল হয়ে দাম উঠেছিল ছয় হাজার টাকায়। ঢাকাইয়্যা আর তার সহযোগী রনি ছিনতাইয়ের পর সেটটি প্রথমে বিক্রি করে মাত্র চার হাজার টাকায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতায়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কিশোর অপরাধী ঢাকাইয়্যা শরীফ ও তার সহযোগী রনিকে আমরা আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোবাইল সেটটি (এম আই নোট-এইট) উদ্ধার করি। এ দুই কিশোর অপরাধীকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদেরকে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন। তাদেরকে গাজীপুর পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

এফএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!