মাঠে গড়াল চট্টগ্রাম সিটির ভোট— রেজাউলের শুরু পাহাড়তলী থেকে, শাহাদাত পাথরঘাটা
বিদ্রোহী প্রার্থীদের শেষ হুঁশিয়ারি আওয়ামী লীগের
করোনা পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের প্রচারণা ফের মাঠে গড়াচ্ছে আজ (শুক্রবার)। প্রচারণর প্রথম দিনেই মেয়র পদে প্রধান দুই প্রার্থী জুমার নামাজ পড়েই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী নিজেদের পারিবারিক মসজিদ বহদ্দারবাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে ১ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড থেকে তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন।
অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন জুমার নামাজ পড়বেন হজরত আমানত শাহ মাজার মসজিদে । তবে তিনি প্রচারণা শুরু করবেন পাথরঘাটা থেকে। এদিন তিনি বকশির হাট, আন্দরকিল্লা ও ফিরিঙ্গীবাজার এলাকাতেও প্রচারণা চালাবেন।
এছাড়া সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নিজ নিজ ওয়ার্ডে প্রচার প্রচারণা চালাবেন।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে ফের একবার দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের হুঁশিয়ার করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের বাসভবনে মহানগর আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভা থেকে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বিদ্রোহী প্রার্থীদের ভবিষ্যতে কোনো পদ দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।
দলীয় পদে থাকা বিদ্রোহীদের বহিষ্কার করা হবে জানিয়ে সাবেক মেয়র নাছির বলেন, ‘যারা দলীয় পদ-পদবি নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাদের ভবিষ্যতে কোনো পদ-পদবি দেওয়া হবে না। এমনকি তাদের প্রাথমিক সদস্যপদও থাকবে না।’
বিদ্রোহীরা কারও কথা শুনছেন না— মন্তব্য করে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাছির বলেন, ‘এতবার বলা সত্ত্বেও যাদের এখনও বোধোদয় হয়নি, তাদের বিষয়ে আমরা কেন্দ্রকে অবহিত করব। আমরা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে এক ও অভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে উপনীত হয়েছি।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪১টি সাধারণ ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মোট ৫৫টি পদে ৩৪টিতেই দলীয় মনোনয়নের বাইরে আওয়ামী লীগের এক বা একাধিক প্রার্থী আছে। এর মধ্যে সাবেক কাউন্সিলর রয়েছেন ১২ জন।
এদিকে করোনায় কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় চারটি ওয়ার্ডে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া পুনঃতফসিল অনুযায়ী ওই চার ওয়ার্ডে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি)। এই দিন ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। দিনশেষে নতুন করে ৬ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত করা হয়।
এই ৪ ওয়ার্ডে নতুন চূড়ান্ত হওয়া প্রার্থীরা হলেন— সংরক্ষিত ৬ নম্বর আসনের মোছাম্মদ ফারজানা পারভীন, ৩৭ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে শফিউল আলম, আব্দুল মান্নান, মো. সালাউদ্দিন, মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে নাসির আহমেদ। এছাড়া ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন করে করে কেউ মনোনয়ন সংগ্রহ করেননি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতিতে ৭৩৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৪ হাজার ৮৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৯ হাজার ৭৭২ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। ইভিএমের মাধ্যমেই ভোটগ্রহণ হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন ও নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন। ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩টি স্থায়ী ও দুটি অস্থায়ী। বুথ সংখ্যা রয়েছে ৪ হাজার ৮৮৬টি ভোট কক্ষ।
এআরটি/সিপি