মহামারীতেই ক্লাস চলছে চান্দগাঁওয়ের মাদ্রাসায়, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

সরকারি নিয়ম মানেন না অধ্যক্ষ

সরকারের আদেশ অমান্য করে করোনা মহামারীতে ক্লাস চালু করেছে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকার আল আমিন বারীয়া কামিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাদ্রাসাটিতে প্রস্তুতিমূলক ক্লাস শুরু হয়েছে। এদিকে সরকারি আদেশ অমান্য করে মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যে ক্লাস শুরু করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ইসমাইলের একক সিদ্ধান্তে ক্লাস শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্লাস শুরুর কথা স্বীকার করে অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল জানিয়েছেন, এটা প্রস্তুতিমূলক ক্লাস। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস চলছে।

সরকারের আদেশ অমান্য করছেন কেন জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল ব্যস্ততার অজুহাতে ফোন কেটে দেন। এরপর তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

গত ৩০ জানুয়ারি অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে ক্লাস শুরুর কথা জানানো হয়। ওই নোটিশে জানানো হয়, ‘এতদ্বারা আল আমিন বারীয়া কামিল মাদ্রাসার সম্মানিত শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জানানো যাচ্ছে যে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সোমবার পূর্ব রুটিন অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে ইবতেদায়ী শিশু থেকে দাখিল দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠ প্রস্তুতিমূলক ক্লাস শুরু হবে। পরিচালকদের কাছ থেকে রুটিন যথাসময়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্লাসে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান করা হলো।’

মাদ্রাসাটিতে অধ্যয়নরত সপ্তম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনার কারণে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও আমাদের মাদ্রাসায় ক্লাস হচ্ছে। গাদাগাদি করে প্রতিদিন ক্লাস করতে হচ্ছে।

দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, যেহেতু সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার তার মধ্যে এভাবে একগুঁয়েমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার ছিল না মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। আমাদেরও দ্বিধা হচ্ছে সন্তানকে নিয়ে। সে ঠিকমতো ক্লাস করতে যেতে চাচ্ছে না। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ক্লাস না করলেও জরিমানা ও রেজাল্ট খারাপ আসার কথা জানানোয় আমরা বাধ্য হয়ে সন্তানকে মাদ্রাসায় পাঠাচ্ছি। কিন্তু এটা ঝুঁকিপূর্ণ।

মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন, অধ্যক্ষ সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ক্লাস শুরু করে দিয়েছেন। আমরা কয়েকজন শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ সিদ্ধান্ত মোতাবেক দায়িত্ব পালন করতে বলেন। দায়িত্ব পালন না করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন অধ্যক্ষ।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আ স ম জামশেদ খন্দকার বলেন, মহামারীর মধ্যে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেছে। এই ব্যাপারে প্রশাসনকে তদারকি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ক্লাস শুরু করায় চট্টগ্রামের কয়েকটি কোচিং সেন্টারকে জরিমানা এবং সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে মাদ্রাসায় ক্লাস শুরু করে দেওয়াটা আদেশ অমান্য করা। আমরা আল আমিন বারীয়া কামিল মাদ্রাসার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!