মন্দিরে চুরির ঘটনায় ‘লুকোচুরি’

নগরীর চকবাজার থানার মেডিকেল স্টাফ কোর্য়াটার এলাকায় সনাতন সম্প্রদায়ের মন্দিরে চুরির ঘটনায় রহস্য দিনদিন বাড়ছে। এ নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না খোদ পরিচালনা কমিটির লোকজন। চোরের দল মন্দিরের দানবক্সের টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে চুরির ঘটনায় প্রতিকার চাচ্ছে না কেউ। বরং এ প্রতিবেদককে এ নিয়ে খবর প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানান রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্বপন দাশ।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) ভোররাতে চকবাজার চমেক স্টাফ কোর্য়াটার রাধা গোবিন্দ মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন মন্দিরটির চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছেন খোদ মন্দির কমিটির সভাপতি নিজেই। চুরির ঘটনায় ৩ দিন পরও থানায় কেউ অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন চকবাজার থানা পুলিশ।

মন্দিরে চুরির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্বপন স্বপন দাশ চুরির কোন তথ্য জানাতে অনীহা প্রকাশ করেন। বরং এটিকে চুরির ঘটনা নয় দাবি করে ‘স্বাভাবিক ঘটনা’ বলে জানান তিনি। স্বাভাবিক ঘটনা বলতে কি বুঝাতে চান এটি জানাতেও অনাগ্রহ দেখান তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, মন্দিরের বিপরীত পাশে রয়েছে একটি পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ভবন। আর ভবনেই প্রতিদিন সন্ধ্যা পর বসে ইয়াবা ও গাঁজার আসর। রাতে নেশার টাকা জোগাড় করতে এসব নেশাখোররা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। মন্দিরের চুরি করে দান বাক্সের টাকা হাতিয়ে চুরির ঘটনায় এসব মাদকাসক্তরা জড়িত সন্দেহ করছেন মন্দির পরিচালনা কমিটির এক নেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতির এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ওই পরিত্যক্ত ভবনে নেশাখোরদের সঙ্গে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে নেশার ঘোরে থাকে। ঘটনার সঙ্গে নিজের আত্মীয়ও জড়াতে পারে এমন সম্ভাবনায় হয়তো এই ঘটনা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে চকবাজার থানার ওসি রুহুল আমিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, মন্দিরে চুরির ঘটনা শুনেছি। কিন্তু মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে আমাকে কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। যদি অভিযোগ করে তাহলে আমরা তদন্ত করে দেখবো কারা চুরি করেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চুরির ঘটনা জানতে পেরে নিজের ৮ জন বন্ধুকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান চট্টেশ্বরী মন্দির এলাকার বাসিন্দা তন্ময় (ছদ্মনাম) – তারা চুরির বিষয়টি জানতে চাইলে মন্দির কমিটির সভাপতি তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে বলে জানান তন্ময়। তিনি আরো বলেন, আমরা যখন বলেছি-এখানে সিসি টিভি থাকলে ভালো হতো, এরপর সিসিটিভি ক্যামরা লাগিয়ে নিতে পারেন, তখন সভপাতি স্বপন ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আপনাদের এত শখ হলে নিজেরা কিনে এনে লগিয়ে দিন। আমি পারবো না, আর তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান, শুধু শুধু ঝামেলা বাড়াবেন না।’

বিএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!