মধ্যরাতে পটিয়ায় ব্রাশফায়ারে তিন যুবলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ, হুইপের ভাইয়ের দিকে তীর

চট্টগ্রামের পটিয়ায় একদল দুর্বৃত্তের হামলায় উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়কসহ তিন যুবলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মধ্যরাতে পটিয়ায় ব্রাশফায়ারে তিন যুবলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ, হুইপের ভাইয়ের দিকে তীর 1

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন রাস্তার মাথা আমজুর হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ নম্বর সার্জারি ওয়াডে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলমের পক্ষ থেকে আগামী ২৩ এপ্রিল পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের এক ইফতার মাহফিলের দাওয়াত দিতে জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমদকে তার বাড়িতে দাওয়াত কার্ড দিতে যান উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ডি এম জমির উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফু এবং যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেন। সেখান থেকে ফেরার পথে একদল দৃর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই তিন যুবলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হন।

এ সময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে গুলিবিদ্ধ ডিএম জমির উদ্দিন (৫৩), সাইফুল ইসলাম সাইফু (৩৭) ও ইকবাল হোসেনকে (৪০) উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তিনজনকেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রক্তিম দাশ জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনজন গুলিবিদ্ধ লোককে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন তাদের অবস্থা গুরুতর দেখে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনা প্রসঙ্গে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবের নেতৃত্বে আমার নেতাকর্মীদেরকে ব্রাশফায়ার করা হয়েছে হত্যার উদ্দেশ্যে। এ সময় তার সাথে ছিলেন যুবলীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন সবুজ, রানা, সোহেল, আলমগীর ও ছোট লিটন।’

বদিউল আলম আরও বলেন, ‘বিচ্ছু সামশু বুঝতে পেরেছেন পটিয়ায় তার পায়ের তলায় মাটি নেই। তিনি পটিয়াতে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হতে যাচ্ছেন। তাই আগামী শনিবার আমার ইফতার মাহফিল বানচাল ও আমার নেতাকর্মীদের হত্যার পরিকল্পনা করে তার ভাই সন্ত্রাসী নবাবকে দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমান বলেন, ‘জঙ্গলখাইন রাস্তার মাথা আমজুর হাট এলাকায় গোলাগুলির ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আছি। সবার সাথে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করছি। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

তবে গোলাগুলির ঘটনায় নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব বলেন, ‘আমি বুধবার সকালে ওমরা হজ পালন করতে যাব। এখনও পর্যন্ত আমি ওমরা করার কাপড়চোপড় কিনতে ব্যস্ত আছি।’

পটিয়ায় বিভিন্ন ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত নবাব দাবি করেছেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে আমি পটিয়ায় যাইনি। ঘটনা কারা ঘটিয়েছে একমাত্র আল্লাহপাক দেখেছেন।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!