সেই মঞ্চকাণ্ডে বিলবোর্ড ব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র দেখছেন চসিকের কাউন্সিলররা

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভার মঞ্চ থেকে প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরীর স্ত্রীকে নেমে যেতে বলার অভিযোগ তুলে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তুলছে নগর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একটি অংশ। তারা সকলেই রাজনীতিতে প্রয়াত মহিউদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হলেও বিষয়টি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে তা বন্ধ করতে বলেছেন আওয়ামী লীগে চট্টগ্রামের একমাত্র প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এমনকি বিষয়টি নিয়ে অপরাজনীতি হচ্ছে— এ কথা উল্লেখ করে উষ্মা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর দক্ষিণ ও মহানগরের নেতৃবৃন্দও।

এবার মেয়র নাছিরের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনকে ‘নগরীর বিলবোর্ড ব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগের কাউন্সিলররা। মঙ্গলবার যৌথ এক বিবৃতিতে কাউন্সিলরগণ বলেছেন, ‘আমাদের পঞ্চম নির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণ করার পর মাননীয় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন শহরজুড়ে অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদে সচেষ্ট হন। এই অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ কার্যক্রমে সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে প্রশংসিত হয়। এটা সবুজ চট্টগ্রামের শ্রী ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে মাইলফলক। এই বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে সফলতায় যারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা তাদের এই ক্ষোভ দীর্ঘদিন পুষে রাখার পর এখন মাননীয় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে সভা সমাবেশ ও ঘৃণা প্রচারে ব্যস্ত। এই অবৈধ বিলবোর্ড ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে সে অবৈধ অর্থ ব্যয়ে তারা বর্তমান সময়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কাউন্সিলরগণ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তারা জনগণকে সাথে নিয়ে এই অপচেষ্টাকারীদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।’

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘প্রতিনিধি সভার আগের দিন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয় প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহম্মদ ও সভা পরিচালনা করবেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। মঞ্চে আসন গ্রহণ করবেন ঢাকা থেকে আগত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, চট্টগ্রামের মাননীয় মন্ত্রীগণ, ৬ জেলার সংসদ সদস্য, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সহ সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। প্রতিনিধি সভায় যারা বক্তব্য দেবেন তাও নির্ধারিত করা হয়।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এই কাউন্সিলররা বলেন, ‘একটি শান্তিপূর্ণ ও সৃশৃংখল সভায় শেষ হয়ে যাবার পর বিভিন্ন মিডিয়াতে এবং পরে বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র তুমুল জনপ্রিয় প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর জনপ্রিয়তাকে পুজি করে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রদান করা, নন ইস্যুকে ইস্যু করে মাননীয় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার একটা ষড়যন্ত্র দৃশ্যমান হচ্ছে। আমরা কাউন্সিলরবৃন্দ এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তারা বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র ও পরিষদ সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাবান ও সংবেদনশীল। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সকল বিধি বিধান পালন করে সাধারণ সভার মাধ্যমে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রায় ৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের নামকরণ সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে করা হয়েছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক জননন্দিত প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে চট্টগ্রাম ৯ আসন থেকে মনোনয়ন প্রদানের পর বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় কাউন্সিলরবৃন্দ সর্বোচ্চ শ্রম ও মেধার বিনিয়োগ ঘটিয়ে তাকে জয়ী করে আনেন।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নার্গিস খান, নিছার উদ্দিন আহমেদ। কাউন্সিলরদের মধ্যে তৌফিক আহমদ চৌধুরী, শাহেদ ইকবাল বাবু, কফিল উদ্দিন খান, সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু, এম. আশরাফুল আলম,মো. মোবারক আলী, মোরশেদ আলম, জহুরুল আলম জসিম, মোরশেদ আকতার চৌধুরী, মো. সাবের আহমদ, মোহাম্মদ হোসেন হিরণ, এএফ কবির আহমেদ মানিক, গিয়াস উদ্দিন, সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, মো. হারুনুর উর রশীদ, শৈবাল দাশ সুমন, মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ, মোহাম্মদ জাবেদ, নাজুমল হক ডিউক, এস এম এরশাদুল্লাহ, এইচ এম সোহেল, মোহাম্মদ আবদুল কাদের, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, তারেক সোলেমান সেলিম, জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, হাজী নুরুল হক, জাহাঙ্গীর আলম, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, জিয়াউল হক সুমন, হাজী মো. জয়নাল আবেদীন, ছালেহ আহমদ চৌধুরী, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মধ্যে সৈয়দা কাশফিয়া নাহরিন দিশা, জেসমিন পারভীন জেসি, আবিদা আজাদ, আনজুমান আরা বেগম, নিলু নাগ, ফারহানা জাবেদ, ফেরদৌসি আকবর, আফরোজা কালাম, লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী ও শাহানুর বেগম।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!