মগনামা ঘাট দিয়ে ইয়াবা পাচার করছে তিন সিন্ডিকেট

মগনামা ঘাট দিয়ে ইয়াবা পাচার করছে তিন সিন্ডিকেট 1ইমরান হোসাইন, পেকুয়া : পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে কুতুবদিয়া পারাপারের একমাত্র ঘাট (মগনামা ঘাট) দিয়ে ইয়াবা পাচার করছে তিনটি সিন্ডিকেট। শক্তিশালী এই তিন সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা সহ প্রভাবশালীরা। তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ইয়াবা পাচার অব্যাহত রাখায় নদী পারাপারের ঘাটটি এখন ইয়াবা পাচারের ঘাট নামে পরিচিতি পাচ্ছে।

এ ঘাট দিয়ে অত্যন্ত নিরাপদে নদীপথে ইয়াবা এনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। নদীপথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারীর কম থাকায় ইয়াবার বড় মাপের চালান পাচার করতে সক্ষম হচ্ছেন ওইসব সিন্ডেকেটের সদস্যরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা তিন স্তরের বলয় তৈরি করে পরিবহণ করে থাকেন ইয়াবা। যারা সরাসরি ইয়াবা বহন করেন, তারা থাকেন প্রথম স্তরে। প্রথম স্তরের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লে তাদের ছাড়িয়ে নিতে নগদ টাকা নিয়ে সংবাদকর্মী বা রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ে কাজ করেন দ্বিতীয় স্তরের সদস্যরা। ১ম ও ২য় স্তরের সদস্যদের তদারকি করতে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করেন সিন্ডিকেট প্রধানের বিশ্বস্থ ব্যক্তি। এই তিন সিন্ডিকেটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে করেন ইউনিয়নের প্রায় ২০-৩০জন ব্যক্তি।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, মগনামা ঘাট দিয়ে ইয়াবা পাচার করতে মূল নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করেন ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি। এ অবৈধ কাজ নিরাপদ রাখতে ইতিমধ্যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন পুরো মগনামা জুড়ে। তার এ অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে এই পর্যন্ত যারা মুখ খুলেছেন তাদের সবাইকে ফাঁসিয়েছেন মিথ্যা মামলায়, পাঠিয়েছেন জেলে, করেছেন এলাকাছাড়া।

মগনামা ঘাট এলাকায় বিগত তিনদিন (রাত-দিন) নিবিড় পর্যবেক্ষণে মিলেছে ইয়াবা পাচারের সত্যতা। পাচারকারীরা কৌশলী অবস্থান নিয়ে যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশা অথবা সামুদ্রিক মাছ বোঝাই ট্রাকে তুলে দেয় ইয়াবা। গভীর রাত (২-৩টার মধ্যে) করা হয় ইয়াবা বোঝাই। ভোরের আলো ফোটার আগেই যাত্রা শুরু করে গন্তব্যে। রাত ১২টার পর থেকে ঘাটে কাউকে দেখা না মিললেও ২টা থেকে আনাগোনা বাড়তে থাকে সিন্ডিকেটের সদস্যদের। প্লাটফর্মে নির্দিষ্ট গাড়ী অপেক্ষারত থাকে তাদের জন্য। এসব গাড়ীতে করে ইয়াবা চলে যায় চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ভোররাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেয়া সহজ। তাই খুব একটা বাধাগ্রস্ত হতে হয়না পাচারকারীদের।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয়রা জানান, মগনামা ঘাট এলাকায় তিনটি সিন্ডিকেটে ইয়াবা কারবারে জড়িত আছেন শফি আলমের ছেলে এখলাসুর রহমান, উকিল আহমদের ছেলে নুরুল আলম, তার স্ত্রী ও চিহ্নিত ইয়াবা স¤্রাজ্ঞী শাহনাজ পারভিন, মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে মোঃ আব্বাছ, মৃত নুরুল আমীনের ছেলে লিয়াকত আলী, আব্দুল করিমের ছেলে মোঃ আজগর, নুরুল ইসলাম পুতুর ছেলে হালিম, আব্দুন নবীর ছেলে আবু ছালেক ও হাবিবুর রহমানের ছেলে এনাম সহ আরো ১০-১২জন সক্রিয় সদস্য।

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, ইয়াবার বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্স অবস্থানে রয়েছে। মগনামা ঘাটে নজরদারি বাড়ানো হবে। ইয়াবা ব্যবসায় যে বা যারা জড়িত থাকুক। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!