ভোররাতে কর্ণফুলীর পাড়ে গৃহবধূ হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত (ভিডিও)

বাকলিয়ার বলিরহাটে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন শাহ আলম পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ চার পুলিশ গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন বলে থানাসূত্র জানিয়েছে।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বলিরহাট সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীর পাড়ে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’র এ ঘটনা ঘটে।

রাত পৌনে চারটায় বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইলে ফোন করা হলে বডিগার্ড পরিচয়ে একজন তা রিসিভ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘গোপন খবর পেয়ে বুবলীর খুনি শাহ আলমকে গ্রেপ্তারে বলিরহাটে নদীর পাড়ে অভিযানে যান ওসি স্যারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। এসময় সেখানে লুকিয়ে থাকা শাহ আলম ও তার সঙ্গীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুঁড়লে শাহ আলম গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে ওসি স্যারসহ আমাদের চারজন পুলিশ সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা কথিত বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলেই শাহ আলম নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত আবদুল হামিদ চারটার দিকেও শাহ আলম নামের কাউকে হাসপাতালে আনা হয়নি বলে জানিয়েছেন।

এদিকে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ মো. আব্দুর রউফ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বুবলী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিদেশী পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে৤ নুরুল আলম ও নুর নবী নামে শাহ আলমের দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে৤

যা ঘটেছিল আগে

শনিবার (১২ মে) রাত সোয়া নয়টার দিকে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার বলিরহাটে ভাইকে না পেয়ে বোনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত বুবলী আক্তার (৩০) বলিরহাটের বজ্রঘোনায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ ওই সময় বলেন, ‘রুবেল নামে একজনের সঙ্গে শাহ আলম নামে আরেকজনের পূর্ব শত্রুতা ছিল। রাতে শাহ আলম চার-পাঁচজনকে নিয়ে রুবেলকে তার ঘরে খুঁজতে যান। এ সময় তাকে গুলি করতে চাইলে ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে বোন বুবলী মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।’

নিহত বুবলি আক্তার বলিরহাট মদিনা জামে মসজিদ এলাকার নোয়া মিঞার মেয়ে। বলিরহাটের নিয়াজি রোড এলাকার মোহাম্মদ আকরাম বুবলির স্বামী। তাদের ঘরে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। দুই দিন আগে বুবলি শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন বলে জানান পরিবারের লোকজন।

রাত সাড়ে ১২টায় বরিশাল বাজার থেকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই জনকে আটক করা হয় বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে শাহ আলম ও নুরুল আলম। এদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার পর এই দুই সহোদর পালিয়ে নগরীর চাঁন্দগাও থানার বরিশাল বাজার এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেয়। বাকলিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করে। তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তারা ১৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর হারুনুর রশীদের সমর্থক।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!