ভোটারের মন পেতে ঘরে ঘরে নাছির, প্রচারণার মাঠে পিছিয়ে নওফেল অনুসারীরা

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ) আসনের উপ-নির্বাচন ঘিরে মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগের ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তবে হাটে-বাজারে ও চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান সড়ক চষে বেড়ালেও যায়নি ভোটারের কাছে। নগর আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদের দলীয় মনোনয়নের পর থেকেই সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করলেও তেমন দেখা মেলেনি নওফেল সমর্থকদের।

প্রচারণা ছাড়াও সোমবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত নোমান আল মাহমুদের মতবিনিময়েও নওফেল অনুসারীদের প্রথম সারির নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। তবে মতবিনিময়ে নওফেল অনুসারী হিসেবে পরিচিত নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমানসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে ট্রাক নিয়ে নগর ঘুরেছেন খোরশেদ আলম সুজনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তবে তারা চট্টগ্রাম-৮ আসনের আওতায় চান্দগাঁও পাঁচলাইশ এলাকার প্রধান সড়কে মাইকিং ও বক্তব্য দিয়ে ঘুরলেও ভোটারদের ধারে কাছেও নেই বলে ভোটারদের অভিযোগ। তাদের নির্বাচনী প্রচারণা ছিল নগরীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পিকআপ বহরে মাইকিং করে প্রচারণার নমুনা দেখালেও বহর দেখে সাধারণ লোকজনও হতবাক হয়েছেন। ছোট একটি পিকআপে করে ব্যাপক স্পিডে করেছেন নির্বাচনী প্রচারণা। তবে ‘মিট দ্যা প্রেস’ ও বোয়ালখালীতে একদিনের প্রচারণায় উপস্থিত থেকেছেন সুজন।

এই বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা নগরীর ভেতর যে পাঁচটি ওয়ার্ড আছে এতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। রমজান থাকার কারণে প্রচার-প্রচারণায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও খোলার সঙ্গে সঙ্গে সবাই নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছে।’

তবে এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের চান্দগাঁও-মোহরা এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছেন নওফেলের অনুসারী আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সদস্য আরশাদুল আলম বাচ্চু।

শেষদিনে প্রচারণা চালিয়েন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা দেবাশীষ পাল দেবু।

সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ একদিনের প্রচারণায় উপস্থিত থেকেই হারিয়ে গিয়েছেন। প্রচার-প্রচারণার শেষ দিনেও পাওয়া যায়নি তার দেখা। ফোন কলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি সিডিএ চেয়ারম্যানকে।

নোমান মনোনয়ন পাওয়ার পর সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আব্দুচ ছালামের দেখা মেলেছে একদিন। নির্বাচনী প্রচারণায়ও দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা ছিল না তার। যদিও তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার কারণে তিনি নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ থেকে সটকে গেছেন। তবে নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনে উপস্থিত থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন নিজেকে।

আব্দুচ ছালাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নির্বাচনী কার্যক্রমে আমার পুরো পরিবার জড়িত রয়েছে। তবে আমরা আর্টিফিশিয়াল শো অফ করি না।’

নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম বদিও নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকে নির্বাচনী কার্যক্রমসহ প্রচার-প্রচারণায় তার দেখা মেলেনি।

দলীয় মনোনীত প্রার্থীর প্রচারণায় উপস্থিত না থাকায় ভোটারদের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কিন্তু দলীয় লোকজন কেন প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেননি—এই বিষয়ে জানতে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম বদির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এদিকে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করা সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘নোমান আল মাহমুদের জন্য নির্বাচনী প্রচারণা পরিচালনার চেষ্টা করেছি। বিজয়ের মালা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত মাঠ ছাড়বো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রতিটি এলাকায়, পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনী প্রচারণা পরিচালনা করেছি, মানুষের ঘরে ঘরে গিয়েছি। নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে মানুষের যে সারা পেলাম, মনে হলো নোমান আল মাহমুদের জয় নিশ্চিত।’

চট্টগ্রাম-৮ আসনে আগামী ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে উপনির্বাচন৷ ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।

আরএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!