ভুয়া প্রতিবেদনে পাসপোর্ট পেল ১৩ রোহিঙ্গা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ১৭ জন দুদকের কব্জায়

মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সহায়তায় জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্ট কার্ড বানিয়েছে ১৩ রোহিঙ্গা। শুধু তাই নয়, জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু করার পর ইউনিয়ন পরিষদের বালাম বইও গায়েব করেছে অভিযুক্তরা। নাম ও ঠিকানা গোপন করে কক্সবাজার জেলার বিশেষ শাখা থেকে রোহিঙ্গার পক্ষে মিথ্যা প্রতিবেদন দেয়ায় রোহিঙ্গারা পেয়েছে এ দেশের পাসপোর্টও। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা বিশেষ শাখার তিন পরিদর্শক এবং ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়।

অভিযুক্ত ১৩ জন রোহিঙ্গা হলো- কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও থানার আউলিয়াবাদ এলাকার মৃত জালাল আহম্মদের পুত্র মো. তৈয়ব (৩৫), তার ভাই মোহাম্মদ ওয়ায়েস (৩৭), একই পরিবারের সদস্য মোহাম্মদ ইয়াহিয়া (৫৬) ও মোহাম্মদ রহিম (২৮), কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও থানার আউলিয়াবাদ এলাকার মো. তৈয়বের পুত্র আব্দুর রহমান একই পরিবারের সদস্য তার ভাই আবদুস শক্কুর, বোন নুর হাবিবা, জালাল আহম্মদের মেয়ে আমাতুর রহিম (৩৪), একই এলাকার নুর আলমের মেয়ে আসমাউল হুসনা, একই এলাকার বাসিন্দা মৃত সোয়াইবের পুত্র হাফেজ নুর আলম, হাফেজ নুরুল আলমের মেয়ে আমাতুর রহমান, তার মেয়ে ওসামা এবং কক্সবাজার সদর থানার পূর্ব নতুন বাহারছড়া এলাকার মো. তৈয়বের স্ত্রী নুর হামিদা।

অভিযুক্ত বাকিরা হলেন- কক্সবাজার জেলার বিশেষ শাখার সাবেক পরিদর্শক এসএম মিজানুর রহমান (৫২), কক্সবাজার জেলার বিশেষ শাখার সাবেক পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন (৪৯), কক্সবাজার জেলা বিশেষ শাখার পরিদর্শক প্রভাষ চন্দ্র ধর (৪৭), সাবেক কক্সবাজার জেলা নিার্বচন কর্মকর্তা বর্তমানে কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, নিজেদের লাভের আশায় ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্ট কার্ড পেতে সহায়তা করেছে কক্সবাজার জেলার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা। একই সঙ্গে এদেশের নাগরিক না হওয়ার সত্ত্বেও তাদেরকে পক্ষে পাসপোর্ট পেতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছে জেলার বিশেষ শাখার সাবেক তিন পুলিশ পরিদর্শক। দন্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্ট কার্ড। একই সঙ্গে দেশের নাগরিক না হওয়ার সত্ত্বেও তাদের পক্ষে মিথ্যা প্রতিবেদনে পাসপোর্ট বানাতে সহায়তা করেন জেলা বিশেষ শাখার তিন পরিদর্শক।

তদন্তে আরও কেউ জড়িত পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- যোগ করেন এই কর্মকর্তা।’

মুআ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!