ভুল চিকিৎসার অভিযোগে লায়ন্স হাসপাতালের ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা

অনুশোচনাই নেই, উল্টো রোগীর পরিবারকে হয়রানির চেষ্টা

ভুল চিকিৎসার অভিযোগে চট্টগ্রামের লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

রোববার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের খুলশী থানায় করা এই মামলায় ডা. মিজানুল হককে আসামি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আরও তিন থেকে চার জন ডাক্তার ও নার্সকে আসামি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ডা. মিজানুল হক লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের কনসালট্যান্ট। তিনি চোখে কৃত্রিম লেন্স বসানোর ফ্যাকো সার্জারিতে প্রশিক্ষিত বলে জানানো হয়েছে লায়ন্স হাসপাতালের ওয়েবসাইটে।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগীর ভাই আবুল হোসেন আকাশ বলেন, ওই হাসপাতালে হালিমা নামে ৩০ বছর বয়সী আরেক রোগীর চোখে লেন্স লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসক তার বোনের চোখে লেন্স লাগিয়ে দিয়েছে।

খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, হালিমা নামে এক রোগীর ভাই মামলাটি করেন। তার অভিযোগ, বোনের নেত্রনালীর সার্জারি করার কথা থাকলেও অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে তার বদলে চোখে লেন্স বসানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, শনিবার (৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ মিস্ত্রিপাড়ার তরুণী হালিমা আক্তার (১৯) খুলশীতে অবস্থিত চট্টগ্রাম লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে গিয়েছিলেন নেত্রনালীর অপারেশন করাতে। কিন্তু লায়ন্সের ডাক্তাররা সেই হালিমার চোখে অপারেশন করে বসিয়ে দিয়েছেন লেন্স। সেই ভুল ধরা পড়ে অপারেশনের পর। ভুল অপারেশনে রোগীকে চোখে লেন্স বসিয়ে দেওয়ার পর অনুশোচনা কিংবা ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, উল্টো সেই ভুল অপারেশনের টাকা দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানায় লায়ন্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।।

মামলার বাদী আবুল হোসেন আকাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার বোনের চোখে ভুল অপারেশন করে লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের ডাক্তার। এরপর তারা কোন অনুশোচনা তো দূরে থাক বরং আমাদের নানান হয়রানি শুরু করে। ভুলে যে অপারেশন তারা করে সেই অপারেশনের ফি আদায়ের জন্য আমার মা-বোনকে চাপ দেয়।’

আবুল হোসেন আকাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পরে থানায় যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কথা বলেছেন। উনারা বলেছেন একটা ভুল হয়ে গেছে। বিষয়টা উনারা দেখবেন। দেখুন আমার কোন টাকা-পয়সা দরকার নাই। আমি শুধু চাই আমার বোনের চোখের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। সে বিষয়টা উনারা নিশ্চিত করবেন।’

হাসপাতালের আশ্বাস বিশ্বাস করতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মামলা করাও আমার উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু উনারা উনাদের ভুল চাপা দেওয়ার জন্য আমাদের হয়রানি করছিলেন। দেখুন ভুল হতেই পারে। কিন্তু সে ভুল চাপা দেওয়ার জন্য যদি একটা দাতব্য হাসপাতাল রোগীর পরিবারকে হয়রানি করে তাহলে কাদের ওপর আস্থা রাখবো আমরা? তবু উনারা বলেছেন আমার বোনের চোখের কোন ক্ষতি হবে না এটা উনারা নিজেদের অবজারভেশনে রাখবেন। এতকিছুর পরেও আমি উনাদের কথায় বিশ্বাস রাখতে চাই।’

আরএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!