ভিক্ষুকের মৃত্যু, শেষ বিদায়ের আয়োজন চান্দগাঁও থানার ওসির

কেউ মারা যাওয়া খবর শুনেই ছুটে আত্নীয়স্বজন। পাড়া-প্রতিবেশিও কাছের মানুষকে একনজর দেখতে আসে। আসে শেষ বিদায়ের আয়োজনটুকু গুছিয়ে দিয়ে। এ ছুটে আসায় থাকে মৃতের প্রতি আবেগ-শ্রদ্ধার প্রতিফলন। কিন্তু এখন করোনার ভয় এই আবেগ কেড়ে নিয়েছে অনেকখানি। মৃত্যুর পর কাছের মানুষের ছুটে যাওয়ার আবেগে পড়েছে ছেদ।

বুধবার দুপুর কিংবা বিকেলের কোন এক সময় নিজের ঘরেই মারা যান ৯০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল গাফফার। পেশায় ছিলেন তিনি ভিক্ষুক। আত্মীয়স্বজন কিংবা প্রতিবেশীদের কেউ এগিয়ে আসেনি দাফন কাজে। এমনকি পাড়ার মসজিদের ইমাম জানাজা পড়াতেও রাজি ছিলেন না। কারণ তাদের ধারণা, আব্দুল গাফফার করোনা আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন।

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার বরিশাল বাজার রিয়াজ উদ্দীন উকিল বাড়ির ঘটনা এটি। বুধবার (২৭ মে) রাতে এই খবর গেল চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকারের কাছে। এরপরই আব্দুল গাফফারের শেষ বিদায়ের সকল আয়োজনই সম্পন্নের দায়িত্ব নেয় পুলিশ।

ওসি’র নির্দেশে পরদিন সকালে চান্দগাঁও থানার এসআই বেলাল ওই ব্যক্তির মরদেহ ধোয়ানোর ব্যবস্থা করেন। সামাজিক দূরত্ব মেনে আয়োজন করা হয় জানাজা। ধর্মীয় রীতি মেনে ব্যবস্থা করেন দাফনেরও।

এ বিষয়ে চান্দগাঁও থানার ওসি আতাউর রহমান খোন্দকার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বুধবার কোন এক সময় ওই বৃদ্ধ নিজ বাসায় মারা যান। তার আত্মীয়স্বজনদের কেউই দাফনের কাজে এগিয়ে আসেনি। এমনকি মসজিদের হুজুর তার জানাজা পড়াবে না। তারা তাকে করোনা আক্রান্ত ভেবেই কাছে যায়নি। পরে আমি জানার পর এসআই বেলালকে দায়িত্ব দিই। তিনি ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ওই লোকের জানাজাসহ দাফনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক মানুষই সচেতন না হয়ে আতংকিত হচ্ছে বেশি। যার ফলে করোনা পরিস্থিতিতে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার চেয়ে আক্রান্ত না হয়েও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!