ভারত-বাংলাদেশ কোস্টাল শিপিং বিষয়ক সেমিনার

ভারত-বাংলাদেশ কোস্টাল শিপিং বিষয়ক সেমিনার 1বিশেষ প্রতিবেদক : ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার ড. আদর্শ সোয়াইকা বলেছেন-বাংলাদেশ শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে ৩০% উন্নতি লাভ করেছে। দু’দেশের মধ্যে গত দুই বছরে সম্পাদিত ৬০টি চুক্তির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড, বিনিয়োগ ও পারস্পরিক সহযোগিতা অনন্য মাত্রা অর্জন করেছে। তিনি বিমসটেক’র আওতায় শিপিং এবং বিবিআইএন’র অধীনে সড়ক যোগাযোগ চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন। ভারত বাংলাদেশে মংলা, ভেড়ামারা ও মিরসরাইয়ে তিনটি ইকনোমিক জোন স্থাপনপূর্বক শিল্প কারখানা গড়ে তুলবে এবং বে-টার্মিনাল নির্মাণে সহযোগিতা করবে। ডেপুটি হাই কমিশনার পানগাঁও এবং কোলকাতা বন্দরের মধ্যে কার্যক্রম বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন ।

আজ মঙ্গলবার চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এবং ভারতীয় দূতাবাসের যৌথ আয়োজনে “ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ বাইল্যাটার‌্যাল ট্রেড এন্ড কমার্শিয়াল রিলেশন্সঃ স্পেশাল ফোকাস অন ওয়াটারওয়েজ কানেক্টিভিটি এন্ড কোস্টাল শিপিং” শীর্ষক সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারী (কমার্শিয়াল) শিশির কোঠারী।

নগরীর আগ্রবাদস্থ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপত্বি করেন চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। তিনি ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে ১২% কাউন্টারভেইলিং ডিউটি অন্যতম মূল প্রতিবন্ধকতা মন্তব্য করে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৫,৪৫২.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আমদানির বিপরীতে মাত্র ৬৮৯.৬২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানির বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ করেন।

মাহবুবুল আলম বলেন-কোস্টাল শিপিং চুক্তির ফলে দু’দেশের বাণিজ্যে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। অতীতে সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ার মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালনা করতে হতো কিন্তু বর্তমানে এ চুক্তির ফলে চট্টগ্রাম, মংলা, পানগাঁও এবং আশুগঞ্জ থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরসমূহের সাথে সরাসরি কার্গো ও কন্টেইনার পরিবহন সম্ভব হচ্ছে এবং সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে ছোট ক্রেইন এবং পানগাঁওয়ে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট সংগ্রহের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

সেমিনারে এফবিসিসিআই’র সদ্যবিদায়ী সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহ্মাদ, চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম, সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, সদ্যবিদায়ী পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ’র সদস্য (ফাইন্যান্স) মোঃ কামরুল আমিন, জাপানের অনারারী কনস্যুল জেনারেল মোঃ নুরুল ইসলাম, ওওসিএল’র জিএম ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, হুন্দাই ওশ্যান ইন্টারন্যাশনাল’র আতাউল করিম চৌধুরী, ব্যবসায়ী নেতা তাহের সোবহান, রিভার লাইনের এমডি মাহবুব আহমেদ, প্রান্তিক শিপিং’র এমডি ইঞ্জি. গোলাম সরওয়ার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে চেম্বার পরিচালকবৃন্দ এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, কামাল মোস্তফা চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), মোহাম্মদ হাবিবুল হক, মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), এম. এ. মোতালেব, মোঃ জহুরুল আলম, মাহবুবুল হক চৌধুরী (বাবর), সরওয়ার হাসান জামিল, অঞ্জন শেখর দাশ, মোঃ জাহেদুল হক, মোঃ আবদুল মান্নান সোহেল ও বিকেএমইএ’র শওকত ওসমানসহ সংশ্লিষ্ট সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামস্থ ভারতের বিদায়ী সহকারী হাই কমিশনার সোমনাথ হালদারকে চেম্বারের পক্ষ থেকে বিদায়ী সম্ভাষণ জানানো হয়। এ সময় তিনি ভারতীয় ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে যথাযথ কাগজপত্র ও প্রকৃত তথ্য দাখিলের অনুরোধ জানান। তিনি চট্টগ্রামে অবস্থানকালে সার্বিক সহযোগিতার জন্য চেম্বার কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন। সেমিনারে উপস্থিত শিপিং সেক্টর নেতৃবৃন্দ উল্লেখিত কোস্টাল শিপিং আরো কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট নদীসমূহ কমপক্ষে ৪ মিটার পর্যন্ত ড্রেজিং করা, বন্দরের ট্যারিফ যৌক্তিকহারে নির্ধারণ এবং কমপক্ষে ১২০ মিটার বা তদুর্ধ্ব জাহাজের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের সুপারিশ করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!