‘ভাবমূর্তি’ বাঁচাতে ফেসবুক মন্তব্যে লাগাম টানতে চায় চবির রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভাগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় এই নির্দেশনা বলে জানা গেছে। যদিও এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (৯ জুন) বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আনোয়ারা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের প্রতি এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এতদ্বারা রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সকল শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, শিক্ষার্থীরা এ বিভাগ সম্পর্কে কোন মন্তব্য সামাজিকমাধ্যমে করবে না। এতে বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে।’

এদিকে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ব্যাপক হাস্যরসে মেতে উঠেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। চমকপ্রদ ক্যাপশন দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ফেসবুক টাইমলাইন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন গ্রুপে বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করেন। যার মন্তব্যের ঘরে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন। যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

মামুন নামের এক শিক্ষার্থী বিজ্ঞপ্তির ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেন, ‘আমার মনে হয় না কোনো ছাত্র-ছাত্রীর এত বড় সাহস আছে যে, সে নিজের ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্টের স্যারের বিরুদ্ধে কথা বলায় আত্মহত্যা করছে, নাম্বার কম দিছে এমন সংবাদও প্রকাশিত হতে দেখেছি। আবার নাম্বার বেশি দিবে বলে ঢাবির প্রফেসর তার রুমে ছাত্রী ঢুকিয়েছে এমনও সংবাদ কভার হতে দেখেছি।’

ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘নিজের বিভাগ সম্পর্কে কথা বলে নিজের পায়ে কুড়াল মারবে কে? মজার ব্যাপারটা হচ্ছে, রাজনীতি বিজ্ঞান যেখানে গণতন্ত্রের অধিকার প্রচার করাই যেখানে শেখানো হয়, সেখানে এমন নোটিশ দিয়ে গলা চেপে দিচ্ছে।’

রায়হান নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘সবাইকে ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার অনুরোধ।’

চবি ঝুপড়ি নামক গ্রুপে বিজ্ঞপ্তির ছবি পোস্ট করা হলে ৫২ মিনিটে ৯০ জন শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন এবং ৯ জন শেয়ার করেন।

দিল নওরীন নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হইলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন বর্তমান অথবা প্রাক্তন শিক্ষার্থী এই নোটিশ দেখে হতাশা এবং লজ্জায় সোশ্যাল মিডিয়াতে ঢোকাও বন্ধ করে দেবে। পুরো বাকরুদ্ধ করে দেয়ার মতো ব্যাপার স্যাপার আর কি!!!’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আনোয়ারা বেগম কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নোটিশটি বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!