ভাগ-বাটোয়ারায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেল কোতোয়ালী থানা বিএনপি

কোতোয়ালী থানা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। কমিটিতে মঞ্জুর রহমান চৌধুরীকে সভাপতি ও জাকির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

বুধবার (৭ আগস্ট রাতে) ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটি ঘোষণা দেওয়ার পর কেউ বলছেন বক্করের ছাড়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন দুজনের ভাগ-বাটোয়ারার কমিটি। তবে এই আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে এসে কোতোয়ালী বিএনপির সভাপতি হওয়া শিল্পপতি এম শামসুল আলমের কোন অস্তিত্ব এই কমিটিতে নেই।

সর্বশেষ বিএনপির এই থানা কমিটির সভাপতি ছিলেন শিল্পপতি এম শামসুল আলম। তিনি ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির কাছে ধরাশায়ী হয়েছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এই আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। ঋণ খেলাপী হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল হয়। এরপর থেকে তাকে আর বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে সক্রিয় দেখা যায়নি। তবে তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন।

শামসুল আলমের আগে কোতোয়ালী থানা বিএনপির সভাপতি ছিলেন এএম নাজিম উদ্দিন। তিনি বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার আগে তিনি নগর বিএনপির শ্রমিক দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মঞ্জুর-জাকিরের কমিটিতে ফরিদ উদ্দিন আহমদকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, আমিনুর রহমান মিয়া, মুসলিম উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম সালাম, মো. ইউসুফ, দেলোয়ার হোসেন দিলু, সাইফুল ইসলাম, আবদুল আহাদ স্বপন, আবদুল মান্নান, ইউসুফ খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, দিদারুল আলম, এনায়েতুল হক এনাযেত, রফিকুল ইসলাম, প্রশান্ত কুমার পান্ডে, সাবের আহমেদ ও নিজাম উদ্দিনকে সহসভাপতির পদ দেওয়া হয়।

আনোয়ার হোসেনকে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, নূর মোহাম্মদ, মো. সেলিম, আবুল কালাম, এডভোকেট ইমতিয়াজ উদ্দিন তারেক, আবুল কালাম, মো. ইসহাক ও এম সাইফুল ইসলাম সেলিমকে যুগ্ম সম্পাদক এবং সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী পিয়ালকে কোষাধ্যক্ষ, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শমসের, নাজমুল হক ফিরোজ ও আবদুস শুক্কুরকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।

এছাড়াও দীপক চৌধুরী কালুকে দফতর সম্পাদক ও মো. রিয়াদ হোসেনকে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক করা হয়।

এবারের কোতোয়ালী থানা বিএনপি কমিটিতে শাহাদাতের অনুসারীদের প্রভাব বেশি। বক্কর কমিটির ব্যাপারে ছাড় দিয়েছেন। কোতোয়ালীর স্থায়ী বাসিন্দা বক্কর। নিজের থানায় কমিটি না থাকা তিনি আত্মসম্মানের বিষয় হিসেবে কোন বাড়াবাড়ি করেন নি।

এ ব্যাপারে আবুল হাশেম বক্কর চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের মধ্যে কোন গ্রুপিং নেই। কেউ আবুল হাশেম বক্করের কর্মী নয়। সবাই বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের কর্মী। আমরা সবাই দলের জন্য কাজ করি।

জানা গেছে, নিকট অতীতে কোতোয়ালী থানা বিএনপির কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি কখনো। কারণ এই আসনে ২০০১ সাল অর্থাৎ অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দলের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। নগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মীর মো. নাছির উদ্দিন। তখন নগর বিএনপিতে নোমান-মীর নাছির দ্বন্দ্ব ছিল প্রকাশ্য।

সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদের এই আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। তার পছন্দের লোকদের প্রভাবিত কমিটি হওয়াটা তাই অনেকেই স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন। এব্যাপারে কথা বলতে ডা. শাহাদাতের মুঠোফোনে ফোন করে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!