ভাগ্যবান শ্রীলঙ্কা আর উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়ার মাঝখানে বৃষ্টি

অন্য ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ে মরিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা

এবারের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা দলকে বেশ ভাগ্যবানই বলতে হবে। চারটি ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় পেয়েও পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে দলটি। বৃষ্টির কারণে দুটি ম্যাপ পণ্ড হওয়ায় বাড়তি দুই পয়েন্ট পেয়ে যায় এশীয় দলটি। অন্যদিকে চার ম্যাচের মাত্র একটিতে হেরে ছয় পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দল দুটি আজ খেলবে পরস্পরের বিপক্ষে।

বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে তিনটায়।

বিশ্বকাপে এর আগে ১০ সাক্ষাতে মাত্র দুবার অসিদের হারিয়েছে লঙ্কানরা। দুবারই ১৯৯৬ সালে। বাকি সাতটি ম্যাচে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, একটি পণ্ড হয়েছে বৃষ্টিতে। ওয়ানডের পরিসংখ্যানেও এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। দুদলের ৯৬ সাক্ষাতে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৬০ ম্যাচে। শ্রীলঙ্কা জয়ী ৩২টিতে।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে অনেকেই ধরে নিয়েছিল ভাঙা-চোরা দল নিয়ে এবার কিছুই করতে পারবে না শ্রীলঙ্কা। হয়তো হারতে পারে প্রত্যেকটি ম্যাচই। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৪ ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এখন পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে দিমুথ করুনারত্নের দল। যদিও এতে মূল ভূমিকা বৃষ্টির। কেননা তাদের দুই ম্যাচই যে এই বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। এনে দিয়েছে মূল্যবান দুটি পয়েন্ট।

বিপক্ষ দল অস্ট্রেলিয়া অবশ্য এখনো বৃষ্টির কবলে পড়েনি। তারাও খেলেছে ৪ ম্যাচ। এর মধ্যে ৩ ম্যাচে জয়, ১ হার- সেটাও অবশ্য শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে। পয়েন্ট টেবিলের তিনে থাকায় স্বস্তিতেও আছে অসিরা। এর চেয়ে বেশি স্বস্তি তাদের এনে দিয়েছে দলের ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের স্বরূপে ফেরা।
ভাগ্যবান শ্রীলঙ্কা আর উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়ার মাঝখানে বৃষ্টি 1
বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফিরলেও নিজের চিরচেনা ছন্দে ফিরতে পারছিলেন না। ক্যারিয়ারে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য সুনাম কুড়ালেও, এই বিশ্বকাপে মন্থর গতির ব্যাটিংয়ের জন্য হচ্ছিলেন সমালোচিত। যদিও দলের পুরো আস্থা ছিল তার উপর। সেই আস্থার প্রতিদান দিতেই কিনা ভারতের বিপক্ষে ৮৬ বলে মাত্র মাত্র ৫৬ রান করার পর, পাকিস্তানের বিপক্ষে হাঁকিয়েছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি (১১১ বোলে ১০৭ রান)।

সেই সেঞ্চুরির সুবাদেই ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তানকে এর আগের ম্যাচে ৪১ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। জয়ে ফেরায় দলের মধ্যে এখন চনমনে ভাব। যদিও ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজও খেলতে পারছেন না দলের অলরাউন্ডার মার্কোস স্টোইনিস। সে কারণে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের নামা এখন অনেকটাই নিশ্চিত।

পরিবর্তন আসছে না লঙ্কানদের একাদশেও। পেসার নুয়ান প্রদীপ নেট প্র্যাকটিস শুরু করলেও এখনো নিজেকে শতভাগ ফিট প্রমাণ করতে পারেননি। ম্যাচের আগে যদি ফিটনেস টেস্টে পাশ করে যান, তবেই কেবল একাদশে পরিবর্তন আসতে পারে শ্রীলঙ্কা দলের।

তবে আজ শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হয়তো বৃষ্টি সুবিধা পেতে যাচ্ছে না শ্রীলঙ্কা। ওভালের আকাশে মেঘ থাকলেও, আলো আছে যথেষ্ট। আবহাওয়ার পূর্বাভাসও খেলার উপযোগী। সুতরাং, পয়েন্ট হাসিল করতে ভালো ক্রিকেট উপহার দিতে হবে তাদের। লাসিথ মালিঙ্গা ঝটিকা সফর শেষে দলের সঙ্গে যোগ দেয়ায় সেই ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী লঙ্কান শিবির।

যদিও পরিসংখ্যান কিংবা অতীত ইতিহাস কথা বলছে না সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনেদের উত্তরসূরিদের হয়ে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৯বারের মুখোমুখি দেখায় অস্ট্রেলিয়ার জয় যেখানে ৭টি, সেখানে শ্রীলঙ্কা জয়ের হাসি হাসতে পেরেছে মাত্র ১বার। বাকি ম্যাচটি হয় পরিত্যক্ত। সুতরাং, আজ অসিদের বিপক্ষে যে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে যাচ্ছে এশিয়ার দলটি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে।

সাড়ে ছয়টায় দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান লড়াই
ভাগ্যবান শ্রীলঙ্কা আর উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়ার মাঝখানে বৃষ্টি 2
দুই হারু পার্টির লড়াই। এক ম্যাচও জিততে না পারা দুই দলের ম্যাচ। একপাশে আফগানিস্তান, অন্যপ্রান্তের দলটার নাম শুনেই চমকে যেতে হয়, ফেভারিট তকমা নিয়ে আসরে আসা সাউথ আফ্রিকা। এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো ব্যাটসম্যান না থাকায় প্রোটিয়াদের হয়তো কেউ হট-ফেভারিটের তালিকায় রাখেনি, সেজন্য এতটা খারাপ খেলবে তেমনও কেউ ভাবেনি। প্রথম চার ম্যাচে জয়হীন সাউথ আফ্রিকা, এটা কে ভেবেছে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে?

এই চার ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট সাউথ আফ্রিকার। সেটাও আবার নিজ গুণে নয়, বৃষ্টির কল্যাণে। ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারতের কাছে হার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও বেরিয়ে গিয়েছিল ব্যাটিংয়ের কঙ্কাল, বৃষ্টি এসে পড়ে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সেই ম্যাচ। সেমিফাইনাল প্রায় অনিশ্চিত হয়ে গেছে, সম্ভাবনা যা আছে তাতে করতে হবে প্রায় অসম্ভব কিছু। জিততে হবে বাকি পাঁচ ম্যাচ! সেই বাকি ম্যাচগুলোর প্রথমটা হচ্ছে আফগানদের বিপক্ষে।

চার ম্যাচে একটা জায়গায় ভীষণরকম মিলছিল সাউথ আফ্রিকানদের। প্রায় সব ব্যাটসম্যানই ভীষণ রকম ব্যর্থ। সবচেয়ে অভিজ্ঞ যিনি, সেই হাশিম আমলা ভুগছেন ফর্মহীনতায়। ফর্মে নেই অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস এবং কুইন্টন ডি ককও। হারতে হারতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে বলে ব্যাটসম্যানদের সতর্ক করে দিয়েছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।

একই অবস্থা আবার আফগানিস্তান শিবিরেও। যে বোলিং দিয়ে বিশ্বকাপ মাত করে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল গুলবাদিন নায়েবদের সেই বোলিং এখন নির্বিষ, ভীষণ রকম অনুমেয়। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বোলিংয়ের ধারটা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ আফগানদের সামনে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!