ভাইয়ের খুনে ভাইয়ের ফাঁসি, মা-বোনকে কাটাতে হবে যাবজ্জীবন

প্রবাসীকে গলাকেটে খুনের দায়ে আপন ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই রায়ে আদালত ওই প্রবাসীর মা ও বোনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার আব্দুস সালাম চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। মৃত্যুদণ্ড দণ্ডিত আসামি মো. আজম আব্দুর রাজ্জাকের আরেক ছেলে। যাবজ্জীবন দণ্ড পেয়েছেন সালামের মা ফরিদা বেগম ও বোন কামরুন নাহার।

সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে জানা গেছে, আব্দুস সালাম চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। বিদেশ থেকে দেশে ফেরার পর তার সম্পত্তি ও টাকা পয়সা নিয়ে পরিবারের সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে। বিদেশে থাকাকালীন বাবা, মা, ভাই বোনদের তিনি যেসব টাকা পয়সা পাঠিয়েছেন দেশে এসে তার হিসাব চাইলে বাবা রাজ্জাক জানান, বিদেশে থাকাকালে সালাম যে টাকা পয়সা পাঠিয়েছে তা সংসারের খরচে ব্যয় হয়েছে। তখন সালাম স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা হয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দেন। ২০০৯ সালের ১৯ অক্টোবর ঘটনার দিন সকালে আব্দুস সালাম তার বাড়ির সামনে ভেঙে যাওয়া গোয়ালঘর ঠিক করছিলেন। তার বাবা রাজ্জাক ও ছোট ভাই আজম তাকে গোয়ালঘর ঠিক করতে বাঁধা দেন। সালামের সঙ্গে তার বাবা, মা ও ভাই আজমের ঝগড়ার এক পর্য়ায়ে আজম জানান, আজই সালামের শেষ দিন। এরপর প্রতিবেশিরা দুই ভাইকে সরিয়ে দিয়ে ঝগড়া থামান। এরপর দুপুরে সালাম তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ভাত খাচ্ছিলেন। এ সময় তার বাবা রাজ্জাক এসে সালামকে মাটিতে ফেলে মাথা চেপে ধরে। আর সালামের মা ফরিদা ও তার ছোট বোন কামরুন নাহার হাত পা চেপে ধরেন আর আজম ছুরি দিয়ে সালামের গলা কেটে ফেলেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান সালাম। হত্যাকাণ্ডের পরপর আজম ও তার বাবা রাজ্জাক পালিয়ে গেলেও স্থানীয় লোকজন ফরিদা ও কামরুন নাহারকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এ ঘটনায় সালামের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদি হয়ে বোয়ালখালী থানায় শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাক, আজম, ফরিদা ও কামরুন নাহারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ মামলা দন্ত করে ২০১০ সালের ৯ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগ গঠন করে। মামলার ২১ জন সাক্ষির মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী জানান, দণ্ডিত তিন আসামির প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আসামি আব্দুর রাজ্জাক বিচার চলাকালীন মৃত্যুবরণ করায় রায়ে তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়।

আইএমই/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!