ব্র্যাডম্যানের রেকর্ড করা সেই ভেন্যু হেডিংলি

ইংল্যান্ডের সবচেয়ে পুরাতন গ্রাউন্ডগুলোর একটি হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ড। ১৮৯৯ সালেই টেস্ট ম্যাচের আয়োজন করেছিল এই স্টেডিয়ামটি। প্রতিষ্ঠা ১৮৯০ সালে। ১৮৩৫০জন দর্শক একসঙ্গে বসে খেলা দেখার সুযোগ পায় এই স্টেডিয়ামে।

ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটের অন্যতম ক্লাব ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের হোম ভেন্যু হেডিংলি। যদিও এই স্টেডিয়ামের মালিকানা এককভাবে ক্রিকেটের নয়। রাগবি ম্যাচও এখানে আয়োজন করা হয়। হেডিংলি রাগবি স্টেডিয়াম নামেও পরিচিতি পেয়ে থাকে মাঝে মধ্যে।

ক্রিকেটের বেশ কিছু ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লিডসের হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের নাম। ১৯০২ সালে এই মাঠেই সফরকারী অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৩ রানে অলআউট করে দিয়েছিল ইয়র্কশায়ার। জিতেছিল ৫ উইকেটের ব্যবধানে। জর্জ হার্বাট হার্স্ট এবং স্ট্যানলি জ্যাকসন- দু’জনই নেন ৫টি করে উইকেট।

১৯৩০ সালের অ্যাশেজে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান এই মাঠেই খেলেছিলেন ৩৩৪ রানের ইনিংস। তবে এই ইনিংসের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো, টেস্টের প্রথম দিনে (একদিনেই) ৩০৪ রান করেছিলেন তিনি। ১৯৩২ সালে ইয়র্কশায়ারের হয়ে স্পিনার হেডলি ভার্টি ১০ রানে নিয়েছিলেন ১০ উইকেট। এই মাঠে তার এক বছর আগেই ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ১০ উইকেটের সবগুলো নিয়েছিলেন ভার্টি।

এর আগে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রায় প্রতিটি বিশ্বকাপেই ম্যাচের আয়োজক ছিল হেডিংলি। ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৩ এবং ১৯৯৯ সালের পর এবারও চারটি ম্যাচের আয়োজন লিডসের এই স্টেডিয়াম।

এবারের বিশ্বকাপে হেডিংলিতে খেলবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তানের রয়েছে দুটি ম্যাচ। একটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং অন্যটি পাকিস্তানের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার আরও একটি ম্যাচ রয়েছে এই স্টেডিয়ামে। প্রতিপক্ষ ভারত।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের দারুণ এক স্মৃতি রয়েছে এই স্টেডিয়ামে। ২০১৭ সালে এই মাঠেই স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক ঐতিহাসিক টেস্ট জিতেছিল ক্যারিবীয়রা।

এই ভেন্যুটি এখন পর্যন্ত ৪৩টি ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজন করেছে। যেখানে ১২টি ম্যাচ বিশ্বকাপে খেলা হয়েছে (১২ ম্যাচের একটির ফলাফল হয়নি)। ১৯৭৫ সালের প্রথম বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের একটি ম্যাচসহ মোট তিনটি ম্যাচ, ১৯৭৯ বিশ্বকাপের তিনটি লিগ ম্যাচ, ১৯৮৩ বিশ্বকাপের তিনটি লিগ ম্যাচ এবং ১৯৯৯ সালে একটি লিগ ম্যাচ ও সুপার সিক্সের দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যাটিং পারফরম্যান্স:-
সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর: ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ড ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩৯ রান করেছিল।
সর্বনিম্ন স্কোর: ১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড ৯৩ রানে গুটিয়ে যায়।
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান: ইংলিশদের সাবেক ওপেনার মার্কাস ট্রেসকোথিক এই মাঠে সর্বোচ্চ ৪০৮ রান করেছেন।
এক ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ: ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার সাবেক মারকুটে ওপেনার সনথ জয়সুরিয়া ১৫২ রান করেছিলেন।
সেঞ্চুরি: ১৬টি। এরমধ্যে ইংল্যান্ডের জো রুট এবং মার্কাস ট্রেসকোথিক ও জয়সুরিয়া সর্বোচ্চ দুটি করে সেঞ্চুরি করেন।

বোলিং পারফরম্যান্স:-
সবচেয়ে বেশি উইকেট: ইংল্যান্ডের সাবেক বোলার ক্রিস ওল্ড এই ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি ১২টি উইকেট পেয়েছেন।
এক ম্যাচে সেরা বোলিং: ২০০১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনিস ৩৬ রানের বিনিময়ে ৭টি উইকেট তুলে নেন।
৫ উইকেট দখল: এই মাঠে মোট ৬বার পাঁচটি করে উইকেট ভাগ করে নেন বোলাররা।

উইকেটকিপিং পারফরম্যান্স:-
সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল: অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উইকেটরক্ষক রড মার্শ ১৩টি ডিসমিসাল করে সবার ওপরে রয়েছেন।
এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ডিসমিসাল: ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি ৬টি ডিসমিসাল করেছেন।

ফিল্ডিং পারফরম্যান্স:-
সবচেয়ে বেশি ক্যাচ: পাকিস্তানের আসিফ ইকবাল ও যথাক্রমে ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম, লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট, বেন স্টোকস, অ্যান্ড্রু স্ট্রস, ডেভিড গওয়ের ৪টি করে ক্যাচ নিয়েছেন।
এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ক্যাচ: ১৯৭৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টনি গ্রেগ ও ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের বিশেন সিং বেদি তিনটি করে ক্যাচ নেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!