বোল্টের নিউজিল্যান্ডের অপেক্ষা বাড়াল স্টার্কের অস্ট্রেলিয়া

বোল্টের নিউজিল্যান্ড হেরে গেল স্টার্কের অস্ট্রেলিয়ার কাছে। জিতলেই বিশ্বকাপের শেষ চারে- এমনই সমীকরণ সামনে রেখে খেলতে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড। বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে জয়ের মঞ্চটা তৈরিই করে রেখেছিলেন। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা পারলেন না। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণে নাজেহাল কিউইরা। দলও পায়নি জয়ের দেখা।

শনিবার লর্ডসে দিবা-রাত্রির ম্যাচে ৮৬ রানের বড় জয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য এই জয়ের আগেই সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে অজিদের।

লর্ডস ময়দানে এদিন টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা তুলে ২৪৩ রান। জবাব দিতে নেমে ৪৩.৪ ওভারে অলআউট হয়ে নিউজিল্যান্ড তুলে ১৫৭ রান। তাসমান পাড়ের দুই দেশের লড়াইটা ঠিক জমল না! অথচ ম্যাচটা হতে পারতো ট্রেন্ট বোল্টের। বল হাতে দারুণ দাপটে হ্যাটট্রিক তুলে নিয়েছিলেন এই কিউই পেসার। কিন্তু তার সেই ম্যাচটাতে হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারেনি নিউজিল্যান্ড। তাদের এই হারে শেষ চারে উঠার লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে। সেমিতে উঠতে এখন শেষ ম্যাচে ৩ জুলাই ইংল্যান্ডকে হারাতেই হবে তাদের।

কিউইদের হারে স্বস্তি টাইগারদেরও। কেননা, পরের ম্যাচে ইংলিশদের তারা হারালে বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মর্তুজাদের বিশ্বকাপ সেমির দরজা খুলে যেতে পারে। অবশ্য শেষ দুই ম্যাচে ভারত ও পাকিস্তানকে হারাতে হবে!

বোল্টের নিউজিল্যান্ডের অপেক্ষা বাড়াল স্টার্কের অস্ট্রেলিয়া 1
ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল বোল্টময়। কিন্তু স্বল্প পুঁজি নিয়েও ম্যাচটি জিতে নেন স্টার্ক গংরা।

শনিবার কম টার্গেটের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পথ হারায় নিউজিল্যান্ড। ৮ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন হেনরি নিকোলস। তাকে ফেরান জেসন বের্হেনডফ। এরপর আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিলও কিছু করতে পারেন নি। ২০ রান তুলে সেই বের্হেনডফের শিকার তিনি। তারপর কিছুটা সময় লড়েছেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তবে অন্য ম্যাচের মতো বড় ইনিংস খেলা হয়নি। ৪০ রান তুলেই মিচেল স্টার্কের শিকার তিনি। তার পতনেই যেন সব শেষ। এরপর রস টেলর ৩০ রান তুললেও অন্যরা উইকেটে আসা-যাওয়ার খেলাতেই ছিলেন ব্যস্ত।

আরো একটা ম্যাচে বল হাতে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের শাসন করলেন মিচেল স্টার্ক। এই অজি বোলার নেন ২৬ রানে ৫ উইকেট। দুটি উইকেট নেন বের্হনডফ।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে লড়েছেন দু’জন-উসমান খাজা ও অ্যালেক্স ক্যারি। দু’জনই তুলে নিয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। ক্যারি ৭২ বলে ৭১ রান তুলে কেন উইলিয়ামসের শিকার। ইনিংসে ছিল ১১টি বাউন্ডারি। ওয়ান ডাউনে নেমে খাজা ১২ রানের জন্য পেলেন না শতরান। ১২৯ বল খেলে তিনি করেন ৮৮ রান। অবশ্য এরমধ্যে প্রাণ পেয়েছেন তিনবার!
বোল্টের নিউজিল্যান্ডের অপেক্ষা বাড়াল স্টার্কের অস্ট্রেলিয়া 2
সব ছাপিয়ে শেষ প্রান্তে এসে বল হাতে ঝড় তুলেন বোল্ট। ৪৯ ওভারের তৃতীয় বলে তিনি ফেরান দুর্দান্ত খেলতে থাকা উসমান খাজাকে। পরের বলেই সাজঘরের পথ দেখান মিচেল স্টার্ককে। বোল্টের ইয়র্কার বুঝতেই পারেন নি স্টার্ক। হ্যাটট্রিক বলে তার সামনে ব্যাটসম্যান জেসন বের্হেনডফ। বোল্টের সুইং বলে বোকা বনেন তিনি। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউট।

এরপর বিশ্বকাপে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিকের আনন্দে মেতে উঠেন ট্রেন্ট বোল্ট! ভারতের মোহাম্মদ সামির পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এবারের বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। আর বোল্টের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক।

এমন সাফল্যের পরও ম্যাচসেরা তিনি নন। ম্যাচসেরা অস্ট্রেলিয়ার কিপার ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি। ব্যাটে ৭১ রানে যিনি লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছিলেন অজিদের!

সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৪৩/৯ (ওয়ার্নার ১৬, ফিঞ্চ ৮, খাজা ৮৮, স্মিথ ৫, স্টয়নিস ২১, ম্যাক্সওয়েল ০, ক্যারি ৭১, কামিন্স ২৩*, স্টার্ক ০, বের্হেনডফ ০, লায়ন ০*; বোল্ট ৪/৫১, ফার্গুসন ২/৪৯, নিশাম ২/২৮, উইলিয়ামসন ১/২৫)
নিউজিল্যান্ড: ৪৩.৪ ওভারে ১৫৭/১০ (গাপটিল ২০, নিকোলস ৮, উইলিয়ামসন ৪০, টেইলর ৩০, ল্যাথাম ১৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, নিশাম ৯, স্যান্টনার ১২, সোধি ৫, ফার্গুসন ০, বোল্ট ২*; বের্হেনডফ ২/৩১, স্টার্ক ৫/২৬, কামিন্স ১/১৪, লায়ন ১/৩৬, স্মিথ ১/৬)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮৬ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: অ্যালেক্স ক্যারি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!