বোলারদের নৈপুণ্যে আফগানদের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের সহজ জয়

বেলফাস্টে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতেছে আয়ারল্যান্ড। আফগানিস্তানকে ২১১ রানের সহজ লক্ষ্য দিলেও তা অতিক্রম করতে পারেনি আফগানরা। ব্যাটসম্যানরা সর্বসাকুল্যে সংগ্রহ করতে পেরেছেন ১৩৮ রান।

প্রথমে ব্যাটিং করে আয়ারল্যান্ড। ওপেনার জেমস ম্যাককালাম নিজের ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ৪ রান করে দলীয় ২২ রানের মাথায় আফগান বোলার দৌলত জাদরানের বলে এলবিডব্লিউ হন জেমস ম্যাককালাম। এরপর অ্যান্ডি ব্যালবিরনিও ফিরেন দ্রুত। তিনিও ৪ রান করে দৌলত জাদরানের শিকার হন। এরপর দলের হাল ধরেন পল স্টার্লিং আর অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড৯৯ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় আয়ারল্যান্ড।

এ জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার রশিদ খান। ৬ চারে ৮৩ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে রশিদের বলে বিদায় নেন উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। এরপর দ্রুত ফিরে যান পল স্টার্লিং। আয়ারল্যান্ডের দলীয় সর্বোচ্চ ৭১ রান করা পল স্টার্লিং ফিরেন গুলদাবিন আইবের বলে। ১০ রান করে রান আউট হন গ্যারি উইলসন। আবার চাপে পড়ে আইরিশরা।

কেভিন ও’ব্রায়েন আর জর্জ ডকরেল মিলে গড়েন ৫৮ রানের জুটি। ৪ চারে ৪৪ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে চাপ সামাল দেন কেভিন ও’ব্রায়েন। তিনি ফিরেন আফতাব আলমের বলে। লোয়ার অর্ডার ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো। মার্ক অ্যাডাইর বোল্ড হন ৭ রান করে। শেষ ১৮ রানের মধ্যে পতন ঘটে ৫ উইকেটের। ২১০ রান করে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। তিনটি করে উইকেট নেন আফতাব আলম আর দৌলত জাদরান। দুই উইকেট পান রশিদ খান।

শুরু থেকেই দুই আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ আর হজরতউল্লাহ জাজাইকে আটকে রাখেন আয়ারল্যান্ডের বোলাররা। রান হচ্ছিল মন্থর গতিতে। ওভারপ্রতি গড় রান ছিল অনেক সময় দুইয়েরও কম। পঞ্চম ওভারে দলীয় ৭ রানের মাথায় টিম মুরত্যাঘের বলে এলবিডব্লিউ হন মোহাম্মদ শাহজাদ। ১৪ বলে ২ রান করেন তিনি। রহমত শাহকেও নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন টিম মুরট্যাঘ। দলী ১৯ রানের মাথায় ফিরেন তিনি। প্রথম পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তান রান করে মাত্র ২১।

এরপর মার্ক অ্যাডাইর বোল্ড করেন হজরতউল্লাহ জাজাইকে। তিনি করেন ৪০ বলে ১৪ রান। ২২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে যায় আফগানিস্তান। টপ অর্ডারের কেউই দৃঢ়তার সাথে ব্যাটিং করতে পারেননি। সবাই ছিলেন খোলসবন্দী হয়ে।

হাসমতউল্লাহ শাহিদী ফিরেন দলীয় ৪০ রানের মাথায়। তিনি করেন ৩১ বলে ১২ রান। নিয়মিত উইকেট হারানোর পাশাপাশি এত ধীরগতিতে রান তোলায় চাপে পড়ে যায় আফগানিস্তান।

অধিনায়ক আসগর আফগান আর মোহাম্মদ নবী মিলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন। দ্রুত রান তুলছিলেন মোহাম্মদ নবী। ২ চার আর ২ ছক্কা হাঁকিয়ে করেছেন ২৫ বলে ২৭ রান। তার ইনিংসটি লম্বা করতে দেননি কেভিন ও’ব্রায়েন। এরপর আসগর আফগান ফিরেন বয়েড র‍্যাঙ্কিনের বলে। ২৯ রান করে এলবিডব্লিউ হন তিনি।

রশিদ খানও ঝড়ো ইনিংসের ইঙ্গিত দেন। ২ ছক্কায় ৯ বলে ১৬ রানের ছোট্ট ইনিংস খেলে বিদায় নেন র‍্যাঙ্কিনের বলে। তাকে সঙ্গ দেওয়া গুলদাবিন নাইব রান তুলছিলেন বলের সাথে পাল্লা দিয়ে। রানের খাতা খোলার আগেই র‍্যাঙ্কিনের তৃতীয় শিকার হন দৌলত জাদরান। এরপর এক ওভারেই গুলদাবিন নাইব আর মুজিব উর রহমানকে ফিরিয়ে দিয়ে আফগানিস্তানের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন মার্ক অ্যাডাইর। ১৩৮ রান করে অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান। চার উইকেট নেন অ্যাডাইর। তিনটি উইকেট পান বয়েড র‍্যাঙ্কিন।

মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামবে আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড। বিশ্বকাপের আগে এটিই হবে আফগানিস্তানের জন্য শেষ অফিশিয়াল ওয়ানডে ম্যাচ। এক জুন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে তারা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!