দুর্নীতি/ বেনামে ঠিকাদারি ব্যবসায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলী

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেনামে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চসিকের প্রকৌশল বিভাগে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. কামাল হোসেন সেলিম সরকারি কর্মচারী হয়েও খোদ সিটি করপোরেশনের প্রকল্পে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, চসিক ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের মধ্যে একাধিকবার চিঠি চালাচালি হলেও তিনি রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

জানা যায়, কামাল হোসেনের স্ত্রী জেবুন্নেসা খানমের মালিকানাধীন মেসার্স এএইচ অ্যান্ড এবি ইঞ্জিনিয়ার্স নামের প্রতিষ্ঠানটি চসিকের কয়েকটি প্রকল্পে কাজ করছে।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর ১৭ (৩) ধারা মোতাবেক ‘কোন সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেখে তাহার পরিবারের কোন সদস্যকে তাহার এখতিয়ারাধীন এলাকায় কোন ব্যবসায় জড়িত হওয়ার অনুমতি দিতে পারিবেন না।’’

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ৮ মে মো. কামাল হোসেন সেলিমের দুর্নীতি তদন্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজালা রাণী চাকমা। পরবর্তীতে গত ১৬ জুলাই কামাল হোসেনের দুর্নীতির সম্পূরক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজিকে একটি দাপ্তরিকপত্র দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের (সিটি করপোরেশন-২, শাখা) এমদাদুল হক চৌধুরী। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মো. কামাল হোসেন সেলিমের ব্যাপারে তথ্য চেয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহাকে একটি পত্র দিয়েছেন ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজি।

ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজালা রাণী চাকমা। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় আমার কাছে সম্পূরক প্রতিবেদন চেয়েছে। আমি চসিকের নির্বাহী কর্মকর্তাকে আজ (৮ আগস্ট) চিঠি দিয়ে মো. কামাল হোসেন তার স্ত্রীর প্রতিষ্ঠানের নামে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য সরকারের অনুমোদন নিয়েছেন কিনা তা তিন দিনের মধ্যে জানাতে বলেছি। তাদের কাছ থেকে তথ্য পেলে বিষয়টি আমি মন্ত্রণালয়কে জানাবো।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মো. কামাল হোসেন সেলিম মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি কোন ঠিকাদারি ব্যবসা করি না। এগুলো অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। সিটি করপোরেশন অ্যাকশন নিয়েছিল। এখন কেন এ বিষয়ে আবার প্রশ্ন করছেন?’

বিষয়টি স্বীকার করে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল বিষয়টি। আমরা বলেছি, ‘‘হ্যাঁ। কামাল হোসেনের স্ত্রীর নামে একটি প্রতিষ্ঠান চসিকে ঠিকাদারি ব্যবসা করছে। এ ক্ষেত্রে আগে কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি। এরপর মন্ত্রণালয় আমাদেরকে আর কিছু জানায়নি।’

তবে চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকারের উপপচিালক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজির পত্রটি এখনো হাতে পাননি বলে জানান মো. সামসুদ্দোহা।

এমএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!