বেধড়ক পিটিয়ে বৃদ্ধ বাবাকে ঘরে বন্দি করে রাখলো বখাটে ছেলে

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে ঘরে বন্দি করে রেখেছে বখাটে ছেলে। পরে ছেলের অনুপস্থিতিতে বাড়ির লোকজনকে অনুরোধ করে বন্দি অবস্থা থেকে উদ্ধার হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেছেন ওই বৃদ্ধ বাবা।

জানা গেছে, সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকায় বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে বৃদ্ধ নুরুল হককে (৭০) মারধর করে ঘরে বন্দি করে রাখে তার ছেলে ফরিদ। শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান।পরে তিনি ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের তেমুহনীর এলাকার ৭০ বছর বয়সী নুরুল হককে তার বখাটে ছেলে মো. ফরিদ বৃহস্পতিবার বিকালে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাতের পর ঘরে বন্দি করে রাখে।

রক্তাক্ত বাবাকে চিকিৎসা করানো তো দূরের কথা, বন্দি অবস্থায় এক গ্লাস পানি পর্যন্ত খেতে দেয়নি। রডের আঘাতের ব্যাথায় কাতরানো বাবার আকুতিও ছেলের মন গলাতে পারেনি। আঘাতের পর বিনা চিকিৎসায় অনাহারে থাকতে হয়েছে দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা। পরে ছেলের বাড়ির বাইরে গেলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান ওই বৃদ্ধ।

বৃদ্ধ নুরুল হক জানান, ‘ছেলে ফরিদ কখনো তাকে ভরণপোষণ দেয়নি। বরং তার চাচী খালেদা বেগমের প্ররোচনায় দীর্ঘদিন ধরে আমার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। জুয়া খেলে ও নেশা করে ঘরে ফিরে বহুবার আমাকে মারধর করেছে।’

ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে আমার বসতভিটা বিক্রি করে তাকে টাকার দেওয়ার জন্য বলতে থাকে। আমি বাপ-দাদার রেখে যাওয়া ভিটা বিক্রি করতে পারবো না বলে জানিয়ে দিলে ছেলে ফরিদ আমাকে মারধর করে ও হুমকি দেয়। ঘটনার দিন ছেলে ফরিদ আবার আমাকে গালিগালাজ করে এবং জায়গা বিক্রি করে টাকা দিতে বলে। তার প্রতিবাদ করলে ছেলে আমাকে কিল, ঘুষি ও লাথি দিতে শুরু করে। পরে রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করার সময় চোখের পাশে আঘাত পাই। মারধরের একপর্যায়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এ সময় ছেলে আমাকে আবার লাথি দেয়। পরবর্তীতে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে ঘরে বন্দি করে রাখে।’

বৃদ্ধ নুরুল হক বলেন, ‘এ সময় কেউ যেন আমাকে ঘরের দরজা খুলে না দেয় সেজন্য সবাইকে শাসায়। মারধরের পর রক্তাক্ত অবস্থায় আমি একটু পানি খেতে চাইলে সে আমাকে পানি পর্যন্ত খেতে দেয়নি। শুক্রবার ফরিদ ঘর থেকে বের হয়ে গেলে সবাইকে অনুরোধ করে আমি পালিয়ে এসে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই।’

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ‘এ ঘটনায় আহত বাবা মো. নুরুল হক বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনায় জড়িত বখাটে ছেলেকে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!