বেত্রাঘাতে ধর্ষণচেষ্টার বিচার করা সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার দেনমোহরের টাকা মারার অভিযোগ

৫ বেত্রাঘাতে ধর্ষণচেষ্টার বিচার করা সেই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার এক নারীর দেনমোহরের টাকা মেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ৮ নম্বর সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ওই নারী দেনমোহরের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দিয়েছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড কুমিরা এলাকার মধ্যম ঘোড়ামরার বাসিন্দা তাসলিমা (ছদ্মনাম) পারিবারিক কলহের বিষয় নিয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহম্মদের কাছে।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই পক্ষের সিদ্ধান্তে দেনমোহরের ৮ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে তিন লাখ টাকা আদায় করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে তার স্বামীর কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা আদায় করেন চেয়ারম্যান মনির আহম্মদ। কিন্তু ওই নারীর হাতে ধরিয়ে দেন দেড় লাখ টাকা। বাকি টাকা রেখে দেন নিজের কাছে। গত ১৭ আগস্ট এ শালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

শুধু তাই নয়, চেয়ারম্যান ওই ভুক্তভোগী নারীকে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালত দায়ের করা মামলা তুলে নিতেও হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। হুমকির ঘটনায় ২০১৮ সালে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরিও দায়ের করেন ডলি আক্তার।

আরও জানা যায়, ২০১৯ সালের ৬ মে ওয়ারিশ সনদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করেন ভুক্তভোগী নারীর মা। পরে ওই নারীর নাম দেখার পর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদেরকে আর সনদ দেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি তার মায়ের জাতীয় নাগরিক সনদের তথ্য সংশোধনের জন্য প্রত্যায়নপত্র চাইতে গেলেও চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা না করার অভিযোগ করেন ওই নারী।

জানতে চাইলে ওই নারীর ছোট ভাই চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার আপুর বিয়ের দেনমোহরের দুই লাখ টাকা না দিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। এ টাকার ইস্যু ছাড়াও চেয়ারম্যানের কাছে কোনো নাগরিক সনদ, এনআইডি সংশোধনের প্রত্যয়নপত্র চাইতে গেলে লাঠি দিয়ে মারার হুমকি দেয় চেয়ারম্যানের লোকজন। আমাদের জমি বিক্রি করতে ওয়ারিশ সনদের জন্য গেলে সেখানেও একই আচরণ করা হচ্ছে আমাদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। তাই বাধ্য হয়ে আমার আপু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহম্মদ বলেন, ‘আমি ওই ছেলের কাছ থেকে দেড় লাখ পেয়েছি। সেই টাকা ভুক্তভোগী নারীকে দিয়েছি। আমাকে তো দুই লাখ টাকা দেয়নি। আমি কিভাবে বাকি টাকা দেবো? আমার বিরুদ্ধে ইউএনও’র কাছে অভিযোগও দিয়েছে। সেখানে প্রমাণ হবে ওই টাকা নিয়েছি কি-না?’

প্রসঙ্গত, গত ৩ ডিসেম্বর ধর্ষণ চেষ্টার মত ফৌজদারি অপরাধের ‘লোক দেখানো’ বিচারেরও আয়োজন করে সমালোচনার মুখে পড়েন চেয়ারম্যান মনির আহম্মদ। মাত্র পাঁচটি বেত্রাঘাত করেই ধর্ষণচেষ্টার মত গুরুতর অপরাধের ‘বিচার’ রাতের আঁধারে সেরে ফেলেন তিনি।

মুআ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!