বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানেই খুন মাদ্রাসাছাত্রী

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মাদ্রাসাছাত্রী আয়েশা বেগমকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। দু’চোখ উপড়ে ফেলে এবং একটি কান কেটেও ক্ষান্ত না হয়ে বস্তাবন্দি করে প্রেমিকার লাশ গুমের চেষ্টা চালায় ক্ষুব্ধ প্রেমিক ওমর ফারুক। লাশ উদ্ধারের পর আয়েশার পরিবারের সদস্যরা ও অভিযুক্ত প্রেমিক ফারুকের নিকটাত্মীয়দের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৭টায় মগনামা ইউনিয়নের বিসমিল্লাহ সড়কের পাশ থেকে বস্তাবন্দি লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত আয়েশা বেগম ফতেহ আলী মাতবর পাড়ার জামাল হোসেনের মেয়ে এবং মগনামা শাহ রশিদিয়া আলিম মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।

আয়েশার মা নছুমা খাতুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় ফাতেমা। সন্ধ্যায় বাড়িতে না আসায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিই। শুক্রবার সকালে তার বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া যায়। আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বাবা জামাল হোসেন বলেন, ‘একই ইউনিয়নের মিয়াজি পাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ওমর ফারুকের সাথে আমার মেয়ের প্রেমের সর্ম্পক ছিল। এ ব্যাপারে আমাদের মৌন সম্মতিও ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওমর ফারুকের ভাই মো. মানিক এক শিশুকে খুন করে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। সেসময় আমি তাদের পরিবারে মেয়েকে বিয়ে দেব না বলে জানিয়ে দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মেয়েকে মাদ্রাসায় যাবার পথে অপহরণ করে ওমর ফারুক। অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে আমার মেয়েকে খুন করে সে। পরে লাশ গুমের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বস্তা ভরে সড়কের পাশে ফেলে দেয়। আমি মেয়ের খুনি ওমর ফারুক ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

পেকুয়া থানার এসআই কাজী আব্দুল মালেক বলেন, ‘খবর পেয়ে মগনামা বিসমিল্লাহ সড়কের পাশ থেকে বস্তাবন্দি লাশটি উদ্ধার করি। শিক্ষার্থী আয়েশার চোখ দুটি উপড়ে ফেলা হয়েছে। বাম কান কেটে ফেলেছে। বুকেও ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে প্রেমঘটিত কারণে নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

মগনামা শাহ রশিদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাহমুদ নুর রশিদ বলেন, ‘আয়েশা আমার মাদ্রাসার নবম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। তবে সে বৃহষ্পতিবার মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিল।’

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, ‘খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ওমর ফারুক ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে। ঘটনা সর্ম্পকে জানতে তার দুই চাচিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!