বিয়ের টোপ ফেলে ধর্ষণের অভিযোগ চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

বিয়ে করার টোপ ফেলে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ মামলা হয়েছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রাসেলের (৩২) বিরুদ্ধে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ (১) ধারায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগ এনেছেন ওই নারী।

চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বুধবার (২৭ জানুয়ারি) মামলাটি করেছেন হাটহাজারীর পূর্ব মেখল গ্রামের বাসিন্দা ওই ধর্ষিত নারী। আদালত অভিযোগটি সরাসরি এফআইআর হিসেবে নেওয়ার জন্য হাটহাজারী থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে হাটহাজারী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলছেন, তার কাছে এখনও ওই ধরনের কোনো কাগজপত্র আসেনি। এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, হাটহাজারী উপজেলার পূর্ব দেওয়াননগর গ্রামের এক বাসিন্দার সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল ওই নারীর। কিন্তু পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এ সময় নিজের দুই সন্তানকে জোর করে রেখে দেন স্বামী। নিজের সন্তানকে ফিরে পেতে ওই নারী হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রাসেলের শরণাপন্ন হন।

এ সময় রাসেল স্বামীর কাছ থেকে সন্তান ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ওই নারীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আসামির কথামতো বাদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ দেন। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় থেকে গণশুনানির (অভিযোগ নং-৩০/১৮) জন্য ওই নারীকে ডাকা হয়। এরপরই রাসেল তার দাবি করা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন ওই নারীর কাছে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে আরিফুর রহমান রাসেলের এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় বিচারপ্রার্থী ওই নারীকে। সেখানে যাওয়ার পর ওই নারী রাসেলকে ১০ হাজার টাকা দেন। পরে কফি খাইয়ে তাকে অচেতন করে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনের পাশাপাশি মুঠোফোনেও নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। কয়েক ঘণ্টা পর বাদীর জ্ঞান ফিরলে তিনি আইনের আশ্রয় নেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় রাসেল তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তাতে বাদী রাজি না হওয়ায় মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন রাসেল।

এরপর চলতে থাকে ব্ল্যাকমেইলিং। ইন্টারনেটে ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই নারীর সঙ্গে পরে আরও অনেকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন রাসেল। এর একপর্যায়ে ওই নারী গর্ভবতী হয়ে পড়লে রাসেল ওষুধ খাইয়ে তার গর্ভপাত ঘটান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই নারী বিয়ের জন্য বেশি চাপ দিতে থাকলে একপর্যায়ে রাসেল তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেন। এ ঘটনায় হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় পাঁচ মাস জেল খেটে বাদী গত বছরের ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। এরপর রাসেলের সাথে আবার যোগাযোগ করলে তিনি আগের সব সম্পর্ক অস্বীকার করেন।

এদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেল দাবি করেছেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ওই নারীকে তিনি চেনেন না।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!