বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ১০ লাখ ছাড়াল

বিশ্বে করোনা শনাক্ত এখনো এক বছর পার হয়নি। এরই মধ্যে করোনা সারাবিশ্বে কেড়ে নিয়েছে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) শনাক্ত হয়। প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল উহান থেকে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। ওয়ার্ল্ডমিটার ডট ইনফোর তথ্যানুযায়ী সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১০ লাখ ২ হাজার ৪৫২ জন। শনাক্ত ছাড়িয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লক্ষ ১১ হাজার ২৫১ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ৪৬ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬৪ জন।

করোনার তাণ্ডব চলছে ভারতের বস্তি থেকে ব্রাজিলের গহীন অরণ্য অ্যামাজন ও আমেরিকার বৃহত্তম শহর নিউইয়র্কেও। করোনার ভয়াল ছোবল থেকে রেহাই মিলছে না কারও। মহামারির বিধি-নিষেধ মানুষকে ঘরবন্দি হতে বাধ্য করায় থমকে গেছে বিশ্বের বড় বড় সব ক্রীড়া, বিনোদন অনুষ্ঠান। করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় ভ্রমণপীপাসুরাও আটকা রয়েছেন চার দেয়ালের মাঝে।

করোনাভাইরাসের বিস্তারের গতি ধীর করতে গত এপ্রিলে মানবজাতির অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ লকডাউনের বেড়াজালে আটকা পড়েন। লকডাউনের বিধি-নিষেধ শিথিল কিংবা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর বিশ্বজুড়ে আবারও এই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে, বেড়েছে প্রাণহানিও।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ যুক্তরাষ্ট্র; দেশটিতে করোনার সংক্রমণ দ্রুতগতিতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। রোববার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ লাখ ৭৮ হাজার ছাড়িয়েছে। এতে মারা গেছেন ২ লাখ ৯ হাজারের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় প্রাণহানির শীর্ষে আছে ব্রাজিল (১ লাখ ৪১ হাজার ৭৭৬ জন), ভারত (৯৫ হাজার ৫৭৪ জন), মেক্সিকো (৭৬ হাজার ৪৩০ জন) ও ব্রিটেন (৪৬ হাজার ৭০৬ জন)।

করোনাভাইরাসের তাণ্ডব বিশ্বজুড়ে অব্যাহত থাকলেও বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত এর কোনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পারেননি। জীবন-জীবিকার মাঝে ভারসাম্য আনতে বিশ্বজুড়ে বিধি-নিষেধে শিথিলতা আনতে বাধ্য হচ্ছে সরকার।

করোনার প্রথম ধাক্কায় বিপর্যস্ত ইউরোপে দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে শুরু করেছে। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্যারিস, লন্ডন ও মাদ্রিদের মতো বেশ কিছু শহরে নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যেভাবে এসব শহরে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে তাতে হাসপাতালে চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের দিকে বিশ্বজুড়ে করোনার রেকর্ড সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ঐক্যবদ্ধভাবে মহামারি মোকাবিলার কৌশল না নেয়া হলে বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন আসার আগেই প্রাণহানির সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

তবে এর উৎপত্তি নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা থাকলেও অনেক বিজ্ঞানী বলছেন, বাদুড়ের শরীর থেকে অন্য কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণী হয়ে মানুষের দেহে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!