বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন রাশিয়ার, পুতিনের মেয়ের শরীরে প্রয়োগ

বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাসের রাশিয়া উদ্ভাবিত টিকার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বিষয়টি আরটি নিউজকে নিশ্চিত করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনের মেয়ে ওই করোনা টিকা নিজের দেহে নিয়েছেন।

পুতিন বলেছেন, মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার এই ভ্যাকসিন মঙ্গলবার রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত পেয়েছে। কোভিড-১৯ এর এই ভ্যাকসিনের গণহারে উৎপাদন শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তার নিজের মেয়ে ইতোমধ্যে রুশ বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনার এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। পুতিন বলেন, ভ্যাকসিন নেয়ার পর তার মেয়ের শরীরের তাপমাত্রা হালকা বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু দ্রুতই তা কমে যায়।

‌‘আজকের সকালে বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা নিবন্ধন করা হলো। আমার এক মেয়ে ভ্যাকসিনটি নিয়েছে। এদিক থেকে তিনি ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তার শরীরের তাপমাত্রা ৩৮ হয়েছিল, পরদিন ৩৭। এতটুকুই।’

এদিকে রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ট্যাটিয়ানা গোলিকোভা বলেন, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে প্রথম এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। তবে সাধারণ জনগণের জন্য ভ্যাকসিনটি সহজলভ্য হবে আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে।

বিশ্বে প্রথম হিসেবে রাশিয়ার অনুমোদিত করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তবে মানবদেহে পরীক্ষার মাত্র দুই মাসের মধ্যে ভ্যাকসিনটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় অনেকেই রাশিয়ার বৈজ্ঞানিক সক্ষমতারও প্রশংসা করেছেন।

ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা জানতে শেষ ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এখনও চলমান। তার আগেই রাশিয়ার জনগণের মাঝে ভ্যাকসিনটি গণহারে প্রয়োগের অনুমতি পেল।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তা বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে গেছে এবং মারা গেছেন ৭ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ।

বিশ্বজুড়ে করোনার তাণ্ডব চললেও এখন পর্যন্ত রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশ এর ভ্যাকসিন কিংবা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের তৈরি অন্তত দুই শতাধিক ভ্যাকসিন পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২৪টি মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে পৌঁঁছেছে। তবে মানবদেহে শেষ ধাপের পরীক্ষায় চারটি ভ্যাকসিন রয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!