বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীর তালিকায় চট্টগ্রামের সন্তান নওশাদ আমিন

যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা বিশ্বের শীর্ষ বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যাপক ড. নওশাদ আমিন। মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি তেনাগা ন্যাশনালে কর্মরত এই প্রফেসর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সন্তান। ফলিত পদার্থবিদ্যায় মালয়েশিয়ার যে ১১ জন তালিকায় স্বীকৃতি পেয়েছেন তার মধ্যে রয়েছেন প্রফেসর নওশাদও।

সৌরশক্তির গবেষক হিসেবে খ্যাতি রয়েছে ড. নওশাদ আমিনের। বিদেশে পড়াশোনা ও কর্মরত থাকলেও নওশাদ আমিন বাংলাদেশের সাভারে অবস্থিত বাংলাদেশ এটমিক এনার্জির ‘এনার্জি ইনস্টিটিউটে’ প্রথম প্রজন্মের সোলার সেলে গবেষণার কাজে অবদান রাখেন। বাংলাদেশে চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণা অনুদান ‘হেক্যাপ’ লাভে মূল ভূমিকা রেখে পরে প্রধান পরামর্শক হিসেবে গবেষণাগার তৈরি ও সৌরকোষ গবেষণার কাজে এখনও সহায়তা করে যাচ্ছেন। এছাড়া সাইন্স ল্যাবরেটরির জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্রে দ্বিতীয় প্রজন্মের সৌরকোষ গবেষণার উদ্যোগ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা করে আন্তর্জাতিকমানের গবেষণাগার স্থাপনায় পরামর্শক ও প্রাথমিক প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করেছেন।

নওশাদ আমিন চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকাননের পাহাড়িকা কিন্ডারগার্টেন থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে। পরে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ষষ্ঠ (১৯৮৭) এবং উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম (১৯৮৯) স্থান পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

ল্যাবরেটরিতে প্রফেসর নওশাদ আমিন
ল্যাবরেটরিতে প্রফেসর নওশাদ আমিন

এরপর জাপানের মনবুশো (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) বৃত্তি নিয়ে ১৯৯০ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১৪ বছর জাপানেই কাটান। সেখানে থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে ডিপ্লোমা (১৯৯৪, গুনমা কলেজ অব টেকনোলজি), স্নাতক (১৯৯৬, তোয়োহাসি উনিভার্সিটি অব টেকনোলজি) এবং টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে মাস্টার্স (১৯৯৮) এবং পিএইচডি (২০০১) অর্জন করেন।

শুরুতে বছরতিনেক জাপান মটোরোলাতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত থাকার পর মাঝে বছরখানেকের জন্য আমেরিকার সাউথ ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটিতে ফেলোশিপ পান। স্নাতক পর্যায় (১৯৯৬) থেকেই সৌর বিদ্যুতের মূল সৌরকোষ বিষয়ে গবেষণা শুরু তার। তবে ২০০৪ সালে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মালয়েশিয়ার মাল্টিমিডিয়া ভার্সিটিতে।

এর দুই বছর পর মালয়েশিয়ারই সরকারি ‘ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া’ এ সিনিয়র লেকচারার পদে যোগ দিয়ে ২০০৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০১২ থেকে প্রফেসর পদে পদোন্নতি পান। এরপর ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি তেনাগা ন্যাশনালের বিশেষ আমন্ত্রণে ‘স্ট্রাটেজিক হাইয়ার প্রফেসর’ হিসেবে যোগ দেন তিনি।

 পরিবারসহ অবসরে নওশাদ আমিন

পরিবারসহ অবসরে নওশাদ আমিন

প্রফেসর নওশাদ আমিন সবুজ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা গ্রামের চিকিৎসক নুরুল আমিন চৌধুরী ও দিলারা আমিনের দ্বিতীয় সন্তান। দুই ভাইয়ের মধ্যে ড. নওশাদ কনিষ্ঠ। অগ্রজ আরশাদ আমিন বর্তমানে কর্ণফুলী সার কারখানায় প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।

নওশাদ আমিনের স্ত্রী জান্নাতুল ওয়াসুল তাইরিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক। নুসাইবা, যাহরা ও আয়েশা নামে তিন কন্যাসন্তান রয়েছে এই দম্পতির।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!