বিশ্বরেকর্ড ১৭টি ছক্কার ফুলঝুরিতে মরগ্যানের অসাধারণ এক সেঞ্চুরি

ইংল্যান্ডের ৩৯৭ রান

এবারের বিশ্বকাপে স্বাগতিক ইংল্যান্ডই হট ফেবারিট। গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাথে হেরে বিদায় নেওয়ার পর থেকেই বদলে যায় ইংল্যান্ডের ক্রিকেট। আর এই বদলে যাওয়ার অন্যতম কারিগর ইংলিশদের অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। তার হাত ধরেই আইসিসির ওডিআিই তালিকায় শীর্ষে উঠেছে ইংলিশরা। ইংল্যান্ডে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে কখনো প্রশ্ন না থাকলেও সুযোগ পেলেই কথা উঠতো মরগানের ব্যাটিং নিয়ে। আজ (মঙ্গলবার) আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের জানান দিলেন ইংলিশ অধিনায়ক। রশিদ-নবীদের নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে উঠে ছক্কার মেলা বসান তিনি।

বিশ্বরেকর্ড ১৭টি ছক্কার ফুলঝুরিতে মরগ্যানের অসাধারণ এক সেঞ্চুরি 1
বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরি করার পর ইংলিশ অধিনায়ক মরগ্যান।

ছক্কা হাঁকিয়ে নতুন এক রেকর্ডের মালিকও হয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। বিশ্বকাপ তো বটেই, ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসেরই এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয়ের রেকর্ড গড়েছেন মরগান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৭ টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। ৭১ বলে ১৪৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসও খেলেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

ওয়ানডে ক্রিকেটে অবশ্য এক ইনিংসে ১৬ ছক্কার কৃতিত্ব আছেন তিনজনের। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করেন রোহিত। ১৫৮ বলে ২০৯ রানে করে আউট হওয়ার আগে ১৬ টি ছক্কা হাঁকান ভারতীয় ওপেনার। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকিয়েছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স আর ক্রিস গেইল। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৬ ছক্কা হাঁকান সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্স। ঐ বিশ্বকাপেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিস গেইলও ১৬ ছক্কা হাঁকান।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রান সংগ্রহ করেছে অধিনায়ক ইয়ন মরগানের দল। এটাই এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। চলতি বিশ্বকাপে দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর গড়তে গিয়ে নিজেদের আগের রেকর্ডই ভেঙ্গেছে ইংল্যান্ড। ৮ জুন কার্ডিফে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ উইকেটে তারা করেছিল ৩৮৬। জয়ের জন্য এখন ৩৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর স্পর্শ করতে হবে আফগানদের।

বিশ্বরেকর্ড ১৭টি ছক্কার ফুলঝুরিতে মরগ্যানের অসাধারণ এক সেঞ্চুরি 2
মরগ্যানের আরেকটি ছক্কা। এভাবে তিনি হাঁকিয়েছেন সতেরটি ছক্কা। শুধু ছক্কার হিসেব করলেও তার রান হয় ১০২!

ম্যানচেস্টারে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে মাঠ কাঁপাতে থাকেন ইংলিশরা। ওপেনার জেমস ভিঞ্চ ব্যক্তিগত ২৬ রানে ফিরলেও থামেনি রানের গতি। আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১২০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন জো রুট। তবে কাছাকাছি গিয়েও সেঞ্চুরির দেখা পাননি বেয়ারস্টো (৯০)। নার্ভাস নাইনটিতে গুলবাদিন নাইবের তালুবন্দি হন।

জো রুট-ইয়ন মরগানের তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৮৯ রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন। আফগান বোলারদের কচু কাটা করে চার বাউন্ডারি আর ১৭ ছক্কায় ১৪৮ রানের অনবদ্য এক ক্রিকেটীয় ইনিংস খেলেন মরগান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ইংলিশ অধিনায়কের এটি ১৩তম সেঞ্চুরি। চলতি বিশ্বকাপে এটি তার প্রথম। পাঁচ চার আর এক ছক্কায় ৮৮ রানে ফেরেন রুট। আফগানিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন গুলবাদিন নাইব ও দৌলত জাদরান।

চার ম্যাচে তিন জয় (দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) আর এক হারে (পাকিস্তানের বিপক্ষে) ৬ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে হট ফেভারিট ইংল্যান্ড। আজ আফগানদের হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষ চারে উঠার লড়াইয়ে নিজেদের জায়গা আরো পোক্ত করতে চায় ইংলিশরা।

চার ম্যাচে চার হারে (অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) কোনো পয়েন্ট না পাওয়ায় তালিকার তলানিতে দশম স্থানে আফগানিস্তান। ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে এখনো পর্যন্ত কোনো জয়ের মুখ দেখেনি তারা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!