বিলুপ্তপ্রায় দুই বানরের ঠাঁই হল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়

একটি এল ফটিকছড়ি থেকে, অন্যটি হাটহাজারী

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হেঁয়াকো ইউনিয়নের একটি বাগান থেকে লোকালয়ে চলে আসে বিলুপ্তপ্রায় লজ্জাবতী প্রজাতির একটি বানর। স্থানীয় লোকজনের হাত থেকে লজ্জাবতী প্রজাতির ওই পুরুষ বানরকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার (৬ জুন) রাতে ৪ বছর বয়সী ওই বানরটিকে উদ্ধার করেন ফটিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সায়েদুল আরেফিন। বানরটির উচ্চতা দেড় ফুট ও ওজন দেড় কেজি।

এদিকে গত সপ্তাহে লোকালয়ে এসেছিল আরও একটি পাহাড়ি বানর। এটি রেসাস বা লাল বানর নামে পরিচিত। হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর এলাকা থেকে রেসাস প্রজাতির এ বানর উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল আমিন বলেন, ‘ফটিকছড়ি উপজেলার হেঁয়াকো ইউনিয়নে লজ্জাবতী প্রজাতির একটি বানর লোকালয়ে চলে আসে৷ সেখান থেকে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বানরটিকে উদ্ধার করেন। এর এক সপ্তাহ আগে রেসাস প্রজাতির আরও একটি বানর হাটহাজারীর মির্জাপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। দুই প্রজাতির এ দুটি বানর সুস্থ। তাদের নতুন ঠিকানা হল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা।’

প্রসঙ্গত, এ নিয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় লজ্জাবতী বানরের সংখ্যা হলো ৩টি। এর আগে এপ্রিলে আরেকটি পুরুষ লজ্জাবতী উদ্ধার হয়। লজ্জাবতি বানর বা বেঙ্গল স্লো লরিস ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) এর ২০২০ সালের তালিকা অনুসারে সংকটাপন্ন প্রাণি হিসেবে তালিকাভুক্ত। এরা সাধারণত ছোট আকারের হয়। স্তন্যপায়ী শ্রেণির লরিসিডি পরিবারের সদস্য এই বানর বাংলাদেশের বন্যপ্রাণি আইনের তফসিল-১ অনুসারে সংরক্ষিত প্রাণি। এর বৈজ্ঞানিক নাম (নিকটিসিবাস ব্যংগলানসিস)। নিশাচর এই বানর দিনের বেলায় গাছের উঁচু ডালে নিজেদের আড়াল করে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে।

রেসাস বানর বা লাল বানরের বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাকাকা মিউলাটা। প্রাচীন বিশ্বের বানর প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত বানর। এ প্রজাতির লাল বানর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের প্রাদেশিক প্রাণি হিসেবে পরিচিত। এ প্রজাতির বানরটি (আইইউসিএন) লাল তালিকায় ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটিও সংরক্ষিত।

তবে লাল বানরটি ব্যাপক সংখ্যায় বেড়েছে ও তাদের বাসস্থানের উপযোগী পরিবেশও বিদ্যমান। দক্ষিণ, মধ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহে তৃণভূমিসহ বনাঞ্চল এলাকার বৃক্ষের শাখায় এদের দেখা যায়। মানব বসতির কাছাকাছি থাকতেও পছন্দ করে লাল বানরেরা।

এসআর/এসএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!