বিমান ছিনতাইকাণ্ড/ শেষমেশ চট্টগ্রাম এসে জেরায় রাজি চিত্রনায়িকা সিমলা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টা মামলায় কমান্ডো অপারেশনে নিহত পলাশ আহমেদের সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার সিমলা অবশেষে চট্টগ্রামে আসছেন। মামলার তদন্তের স্বার্থেই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা ডাকে সাড়া দিয়েছেন তিনি।
আলোচিত এ মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে চিত্রনায়িকা সিমলার কথা বারবার উঠে আসলেও তাকে পাচ্ছিলেন না তদন্ত কর্মকর্তা। তবে ঈদের পরই চট্টগ্রামে এসে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার আগে থেকে ভারতের মুম্বাইয়ে থাকা সিমলা তদন্ত কর্মকর্তার মুখোমুখি হতে রাজি হয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ সিমলার সঙ্গে পলাশের বিয়ে হয়। পলাশ আগের বিয়ের খবর গোপন করায় ওই বছরের ৬ নভেম্বর সিমলা পলাশকে ডিভোর্স দেন। চিত্রনায়িকা সিমলার সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের পরেই ‘হতাশা’ থেকে বিমান ‘ছিনতাইয়ের’ চেষ্টা করেছিলেন পলাশ আহমেদ। ঘটনার দিন উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণের পর পলাশ সিমলার সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে ওই সময় কমান্ডো অভিযানে থাকা বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। পরে ৮ মিনিটের এক কমান্ডো অভিযানে পলাশ আহমেদ নিহত হন। ওই সময় বিমান থেকে একটি খেলনা পিস্তল ও কিছু বিস্ফোরকসদৃশ বস্তু আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তবে নিহত পলাশের সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা সিমলার নাম এ মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ওঠে এসেছে। তার সঙ্গে অনেকবার কথা হলেও তিনি সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থান করায় আমাদের মুখোমুখি হতে পারেননি। তবে গত বুধবার (২২ মে) আমার সঙ্গে সিমলার কথা হয়েছে। তিনি কথা দিয়েছেন, ঈদের পরই দেশে এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন। তদন্তে যাবতীয় সহযোগিতা করবেন।’
তিনি আরো জানান, বিমান ছিনতাই মামলায় এ পর্যন্ত মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিমানের ৭ জন ক্রু, এছাড়া ওই বিমানের ইঞ্জিনিয়ার, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার, স্টেশন কর্মকর্তা, বিমান বন্দরের কন্ট্রোল রুমের চার কর্মকর্তা ছাড়াও রয়েছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শাহজালাল আর্ন্তাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫টা ১৩ মিনিটে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিমান বিজি-১৪৭ উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পর পলাশ আহমেদ বোমাসদৃশ বস্তু ও অস্ত্র দেখিয়ে বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। ৫টা ৪১ মিনিটে বিমানটি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্লেনের ‘ইমারজেন্সি ডোর’ দিয়ে যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের দ্রুত বের করে আনা হয়। পরে যৌথবাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিমের অভিযানে মারা যান পলাশ আহমেদ। তবে কেন এই ছিনতাই চেষ্টা করা হয়েছে সেটা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
এডি/সিপি