শেখ সালাউদ্দীন, সীতাকুন্ড প্রতিনিধি ::
সীতাকুন্ডে এ প্রথম ভাটিয়ারী জাহানাবাদ পাহাড়ি এলাকায় বার্ড জাতের ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন সৌখিন এক চাষী শিক্ষিত বেকার যুবক মোঃ সাবের শাহ্ ইমন।
গত ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখে তিনি ১ একর জমিতে অন্তত ৫০০ টি র্বাড জাতের ড্রাগন ফলের চারা রোপন করেন। বর্তমানে এসব চারা বড় হয়ে সুন্দর ও সু-স্বাদু ফল দিতে শুরু করে। কষ্টকরলে যে ভাল ফল পাওয়া যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এ সৌখিন চাষী। তিনি চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে মাষ্টার্স ইন একাউন্টিং করে বর্তমানে আন্তর্জাতিক ইসলামিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের এমবিএ ২য় সেমিষ্টারের ছাত্র। ড্রাগন ফলের চাষ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজির বাগান ও ফলের চাষাবাদে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন।
সৌখিন এ চাষীর সাথে কথা হলে তিনি জানায়, যখন তিনি চট্টগ্রাম সিটি কলেজে মাষ্টার্সে অধ্যায়নরত ছিলেন তখন অপ্রচলিত ফসল ড্রাগন ফল চাষ করার জন্য মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন। এর পর মাত্র ১০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। প্রথম অবস্থায় জ্ঞান স্বল্পতার কারণে ঢাকা থেকে ড্রাগন ফলের চারা এনে কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। কিন্তু এ ক্ষতি তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। স্থানীয় এক ভদ্রলোক মোঃ শামছুল আলমের মাধ্যমে সীতাকুন্ড কৃষি অফিসার সুশান্ত সাহা ও সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্রনাথ এর সাথে পরিচয় হয়ে পরে এ ব্লকের দায়িত্বে থাকা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঝন্টু কুমার নাথ এর সার্বিক সহযোগিতায় ড্রাগন ফল চাষের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে অনেকটা সক্ষম হন।
শুধু তাইনয় কৃষি মন্ত্রনালয় এর পক্ষথেকেও সব রকমের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানায় তিনি। বর্তমানে লোকমুখে শুনে ড্রাগন ফলের বাগান দেখতে উৎসুক মানুষ অনেকে ছুটে আসছেন ।
কৃষক সাবের শাহ্ ইমন বলেন, ড্রাগন চাষে যত বাধা আসুকনা কেন সব বাধা অতিক্রম করে ভবিষৎতে এ উদ্যোগকে একটি বার্তা হিসেবে সারাদেশে পৌছে দিতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস। তবে বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রনালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আকুল আবেদন পাহাড়ের পাদদেশে সরকারি পরিত্যক্ত অনাবাদি জমি সহজ শর্তে বরাদ্দ দিলে ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন রকম ফল ও সবজির চাষকরে দেশের গ্রামীন অর্থনীতিতে বিরাট ভুমিকা রাখতে পারবো বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
এদিকে এ ব্লকে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঝন্টু কুমার নাথ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, উপজেলার ভাটিয়ারী খাদেম পাড়া এলাকার বাসিন্দা শিক্ষিত এক বেকার যুবক সাবের শাহ্ ইমন জাহানাবাদ ব্লকের পাহাড়ি এলাকায় পাদদেশে আর্থিক অবস্থা উত্তোলনের জন্য আমি নিজে এবং আমার বিভাগ সর্ব রকম প্রযুক্তিগত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে ড্রাগন গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। পাহাড়ের পাদদেশে অনুকূল পরিবেশে এ ড্রাগন ফল আবাদে বরই উপযোগি। ফলে উৎপাদনও বৃদ্ধি হয়। ড্রাগন ফলে হাইপ্রোট্রির্ন, ফাইবার, মিনারেল,ভিটামিন সি, ক্যালসিয়ামসহ এতে প্রায় ১০ রকমের পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ রয়েছে।
এবিষয়ে সীতাকু- উপজেলা কৃষি অফিসার সুশান্ত সাহা ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ সালেহীন খাঁন দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সীতাকুন্ড উপজেলায় এ প্রথম এক একর জমিতে পাহাড়ের পাদদেশে ভাটিয়ারী জাহানাবাদ ব্লকে বার্ড জাতের ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন শিক্ষিতি এক সৌখিন চাষী মোঃ সাবের শাহ্ ইমন। তিনি অনেক প্ররিশ্রমি হওয়ায় পাহাড়ের পাদদেশে শক্তমাটি উপড়িয়ে ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। তাকে সকল রকম প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করা হয়েছে। তাই ড্রাগন ফল চাষে স্বফলতা অর্জন করেছেন।
তারা অরো বলেন আমরা ও ঐ এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঝন্টু কুমার নাথ ড্রাগন ফল চাষে এ কৃষকের সাথে থেকে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। যে কেউ পাহাড়ের পাদদেশে ড্রাগন ফল চাষে উদ্যোগ গ্রহন করলে অনেক সু-স্বাদু ড্রাগন ফল চাষে বাজার জাতের মধ্যদিয়ে অধিক হারে লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এ কর্মকর্তারা।
এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::