সোমবার রাতে নগরীর পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকার টংক ফকিরের মাজারের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় কৌশলে রিয়েল বিক্রির নাম করে পথচারীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া ৩১ হাজার ৫’শ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
তিন প্রতারক হল, মো.সাদ্দাম শেখর (২৯), জমির আহমেদ (৪৭) ও আদম সিকদার প্রকাশ মাসুদ (৩০)। এই তিনজন ফরিদপুর থেকে বন্দর নগরীতে এসেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
জমির তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধ্যম বনগাঁও ধোপাভিটা এলাকায় হাঁস-মুরগির ব্যবসা করতেন। সাদ্দাম ঢাকায় রঙ মিস্ত্রি এবং আদম চট্টগ্রাম নগরীতে ফেরিওয়ালার কাজ করতেন।
সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আক্তার জানায়, এ প্রতারক চক্রের সদস্যরা অভিনব কৌশলে রিয়েল বিক্রির আড়ালে কাপড় কাঁচার সাবান রেখে পুটলি ভারি করে সাধারণ পথচারীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। অটোরিকশা চালকের বেশেও নগরীতে বেশ কয়েকটি প্রতারণার ঘটনা তারা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে প্রতারক চক্রের এ তিন সদস্য।
তিনি জানান, “এক পথচারীকে সৌদি রিয়াল দিয়ে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সময় মাজার এলাকায় সাদ্দামকে ধরে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। তখন পুলিশ গিয়ে সাদ্দামের অন্য দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে।”গ্রেফতারের পর জমির পুলিশকে বলেন, দ্রুত সময়ে বেশি টাকা রোজগারের জন্য তারা প্রতারণাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। তার সাথে এ পেশায় তাদের গ্রামের বাড়ির অনেকে জড়িত রয়েছে। গ্রেফতার হওয়া প্রতারক চত্রের অপর সদস্য আদম জানিয়েছেন সে রিকশাচালকের বেশে সাধারণ যাত্রীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের কাছ থেকে রিযেল বিক্রির নাম করে টাকা হাতিয়ে নেয়।
রোববার আগ্রাবাদ এলাকা থেকে মো.আলী ভুট্টো (৪৫) নামে এক যাত্রীকে নিয়ে পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায় যাওয়ার পর ৫০ টাকার রিয়ালটি ওই যাত্রীকে ভাঙ্গাতে দেয়। মো. আলী রিয়ালের বিনিময়ে তাকে এক হাজার ৫০ টাকা দেয়। এসময় মো. আলী ও প্রতারক চক্রের এ সদস্যের সাথে মোবাইল নম্বর বিনিময় হয়।
সোমবার মো. আলীকে আবার ফোন দিয়ে আরও রিয়াল বিক্রির কথা বললে সে রাজি হন এবং নগরীর সদরঘাট থানার টং ফকিরের মাজারের সামনে তাকে আসতে বলে। তখন প্রতারক চক্রের সদস্য সাদ্দাম, জমির ও আদম এক হয়ে নানান কথামালার জালে ফেলে গামছা বাঁধা পুটলি মো. আলীকে দেয়া হয়। এ পুটলির বিনিময়ে তার কাছ থেকে ৩১ হাজার ৫’শ টাকা নেওয়া হয়। পরে তিন প্রতারকই কৌশলে অটো রিকশা নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।
এসময় যাত্রী মো. আলী পুটলি খুলে দেখতে পায় একটা কিংবা দুইটা কাপড় কাঁচার সাবান। সাবানগুলোকে পুরনো পত্রিকা আর গামছা দিয়ে এমনভাবে মোড়ানো হয় যে হাতে নিয়ে মনে হবে রিয়েল এর বান্ডিল। তখন সে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা সাদ্দামকে ধরে পিটুনি দেয়। পরে সাদ্দামকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হলে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও দুজনকে আটক করা হয়।
এই ঘটনায় প্রতারণার শিকার মো. আলী সদরঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি মর্জিনা।