‘বিচারকার্যে সাক্ষীদের যাতায়াত ভাতা নিশ্চিত করা হবে’

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভায় বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান

বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান বলেন, ‘বিচারকার্যে সহযোগিতা করতে আগত সাক্ষীদের উপস্থিতির জন্য যাতায়াত ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও স্বাক্ষীরা সে ভাতা পান না বলে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের দৃষ্টিগোচর হয়। আগে সাক্ষীদের একটি যাতায়ত ভাতা ছিল তা বর্তমানে নেই। ফলে একজন বদলি কর্মকর্তা কিংবা গরীব মানুষ দূর থেকে এসে সাক্ষী দেন অথবা সাক্ষী দিতে এসে দেখেন পরের ডেট পড়েছে তাহলে তাকে বারবার আসতে হয়। এ ক্ষেত্রে তাদের নিজের টাকায় আসা যাওয়া সম্ভব নয়। সরকার অনেক রকম ভাতা দিচ্ছেন সাক্ষীর ভাতাও চালু আছে তবে তা কোন কারণে সাক্ষী পায় না তা আমি দেখব।’

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভা রোববার (১৯ আগস্ট) সকাল দশটায় সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান।

সভায় জানানো হয়, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীর ৯০ আদালতের মধ্যে ২০ আদালতে বিচারিক শূন্যতা রয়েছে তাতে রয়েছে ২২ শতাংশ বিচারিক কাজ। এর ফলে মামলা পরিচালনায় ধীরগতির সৃষ্টি হচ্ছে। বিচারকদের উপর চাপ বেড়ে যায়। জুলাই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন আদালতে ৪১ হাজার ৪২৮ মামলা পেন্ডিং রয়েছে।

সভায় জুন মাসের সিদ্ধান্তের আলোকে জুলাই মাসের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভায় জানানো হয়, চোরাচালান প্রতিরোধে স্থল ও নৌপথে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কর্তৃক জুন মাসে ৩১ হাজার ৬১১ এবং জুলাই মাসে ৩২,১৯৫ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করে জুন মাসে ১ হাজার ৭৩ মামলা ও জুলাই মাসে ১ হাজার ২৩৩টি মামলা রুজু করা হয়। ওই অভিযানের মাধ্যমে জুন মাসে প্রায় ১৩৫ কোটি ও জুলাই মাসে প্রায় ১০৩ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য আটক করা হয়। এ অভিযানে জুন মাসে ৭৮৫ জনকে এবং জুলাই মাসে ৯৩৮ জনকে আটক করা হয়।

সভায় আরও জানানো হয়, জুন মাসে ৭ হাজার ৮০২ চেকপোস্টের মাধ্যমে ৬০ হাজার ৫৮২টি যানবাহনে এবং জুলাই মাসে ৭ হাজার ৭৩৬টি চেকপোস্টের মাধ্যমে ৬৬ হাজার ৮৮০টি যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। এ সংক্রান্তে জুন মাসে ৪৮২ এবং জুলাই মাসে ৫২২ মামলা দায়ের করা হয়। তল্লাশিকালে জুন মাসে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের এবং জুলাই মাসে ৬১ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য আটক করা হয়। এ ঘটনার দায়ে জুন মাসে ৬২২ ব্যক্তি ও জুলাই মাসে ৫৯৮ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

চোরাচালান নিরোধ কার্যক্রমকে কার্যকর ও গতিশীল রাখার লক্ষ্যে আবাসিক এলাকা, ব্যবসা কেন্দ্র ও গুদাম ইত্যাদিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ জুন মাসে ৩ হাজার ৯৫৭ ও জুলাই মাসে ৪ হাজার ৬৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের ফলে জুন মাসে ১৮৭ ও জুলাই মাসে ২৩২ মামলা দায়ের করা হয়। এর মাধ্যমে জুন মাসে ৯২ লক্ষ টাকা মূল্যের ও জুলাই মাসে প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য আটক করা হয়। এ ঘটনায় জুন মাসে ২২২ জনকে এবং জুলাই মাসে ২৬৪ জনকে আটক করা হয়। চোরাচালান অভিযানকে আরও কার্যকর করার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনার অনুরোধ করা হয় জুন ও জুলাই মাসের সভায়। তার প্রেক্ষিতে জুন ও জুলাই মাসে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে জুন মাসে ৬০ হাজার ২টি অভিযান করে ১ হাজার ৭৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়। এতে ১৪২ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য এবং ১ হাজার ৬০৮ জনকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ২৪৬ মামলা রুজু করা হয়। জুলাই মাসে ৬০ হাজার ৮০৬ অভিযানে ১ হাজার ৯৮৭ মামলা দায়ের করা হয়। এতে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য ও ১ হাজার ৮৩১ জনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৩৬৩টি মামলা রুজু করা হয়।

চোরাচালান মামলাসহ অন্যান্য মামলা জেলা কমিটিসহ বিজ্ঞ পিপি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের সাথে সভার মাধ্যমে নিস্পত্তি ও ত্বরান্বিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয় ।

সভায় অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সকল জেলা প্রশাসক, মামলা পরিচালনাকারী পিপি সংশ্লিষ্ট সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন ।

সিএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!