বিকেল হলেই পতেঙ্গা নেভাল হারিয়ে যায় অবৈধ দোকানের আড়ালে

বাণিজ্যে চলে আবাসিকের মিটার

প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের একপাশ ঘেঁষে রয়েছে সারি সারি ভাসমান দোকান। সন্ধ্যার পর সেসব দোকানের চেয়ার ও টেবিলের আড়ালে কুৎসিত রূপ নেয় চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নেভাল এলাকার চেহারা। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকা বন্দরের এ জায়গায় অনেকেই গড়ে তুলেছেন স্থায়ী স্থাপনাও। বন্দর কর্তৃপক্ষ অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করতে মাঝে মাঝে ঝটিকা অভিযান চালালেও মুহূর্তেই আবার গজিয়ে ওঠে অবৈধ স্থাপনাগুলো।

এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিধিমোতাবেক আবাসিক মিটার, বাণিজ্যিক মিটার, টিসি মিটার ও থ্রি-ফেজসহ আরও কয়েকটি পৃথক মিটারের সংযোগ নেওয়ার বিধান থাকলেও সেখানে নিয়ম না মেনে আবাসিক মিটারের লাইন নিয়ে চলছে প্রায় শতাধিক দোকান। বাণিজ্যিক মিটারের পরিবর্তে আবাসিক মিটারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কারণে প্রতিবছর ওই এলাকা থেকে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

পতেঙ্গায় নেভাল এলাকার অবৈধ বাণিজ্যিক স্থাপনায় আবাসিক মিটারের সংযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ হালিশহর সেন্টারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে এখনই খোঁজ নিচ্ছি।’

বিকেল হলেই পতেঙ্গা নেভাল হারিয়ে যায় অবৈধ দোকানের আড়ালে 1

চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দোকানের দখলে যাওয়ার পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও। প্রতিদিন বিকালের পর থেকে পতেঙ্গা নেভাল রোড ভাসমান ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যাওয়ায় ছোট হয়ে আসে সড়কের পরিধিও। এতে হাঁটাচলা করতেই রীতিমতো বেগ পেতে হয়। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন দূরদুরান্ত থেকে আসা পর্যটকরাও।

জানা গেছে, মৎস্য ও কৃষি চাষের জন্য সম্প্রতি নেভাল রোড সংলগ্ন জায়গা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে দরপত্রের মাধ্যমে এক বছরের জন্য ইজারা নেয় সাইরা ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মো. নেছার বলেন, ‘চলতি বছর বন্দর থেকে জায়গাটি ইজারা নিয়েছি মাছ ও কৃষি খামার করার জন্য। দেড় মাস আগে সেখানে মাছের পোনা ছাড়ি। কিন্তু প্রতিদিন মদের বোতল, বিয়ারের খালি কনটেইনার ও সিগারেটের প্যাকেট ফেলার কারণে মাছ চাষে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। প্রতিদিন কিছু কিছু মাছও মরে যাচ্ছে।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ভূমি বিভাগের পরির্দশক আব্দুল হালিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নেভাল রোড দখলে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু সেখানকার লোকজনকে বারবার বলার পরও প্রতিদিন দখল করে গড়া হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা।’

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের উপ-ব্যবস্থাপক (ভূমি) জিল্লুর রহমান, ‘ওই এলাকায় বন্দরের জায়গায় অবৈধ স্থাপনায় বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। গত একমাসে অভিযান পরিচালনা করে শাহ আমানত সড়ক থেকে প্রায় দুই একর জায়গা অবমুক্ত করা হয়েছে। সামনে আবার অভিযান চলবে।’

মুআ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!