বিএসটিআই কর্মকর্তা সেজে জরিমানা নিতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা ‘সাংবাদিক’

বাবু চৌধুরী। কখনো নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। হুমকি দিয়ে আদায় করে চাঁদা। আপাদমস্তক প্রতারক এই যুবক অবশেষে পটিয়ার ধলঘাট ক্যাম্প বাজারের রহমান বেকারিতে বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা সেজে জরিমানার নামে চাঁদা আদায় করতে গিয়ে ধরা পড়েছে জনতার হাতে।

মঙ্গলবার (১ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকে চাঁদা নিতে গেলে জনতা পুলিশের হাতে তুলে দেন ২৮ বছর বয়সী এ প্রতারককে। রহমান বেকারির মালিক ভুক্তভোগী রিফাত চৌধুরী জানান, ২০ মে ৭ রমজান রাত ৯টার দিকে তিন অপরিচিত লোক আমার বেকারির কারখানার পেছন দিকে কাউকে কিছু না বলে ঢুকে পড়ে। আমিও তাদের পেছন পেছন যায়।

তারা কারখানায় ভিডিও করতে থাকেন এক পর্যায়ে আমি তাদের পরিচয় জানতে চাইলে বাবু চৌধুরী আমাকে দৈনিক সূর্যদয়ের ভিজিটিং কার্ড, দেশ বার্তার কার্ড ও ভোক্তা অধিকারের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে নিজেকে বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। এসময় আমার বেকারির বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে আমি নেই বলে জানায়।

তখন কিভাবে আমি লাইসেন্স করতে পারব তার কাছে জানতে চাইলে সে আমাকে জানায় লাইসেন্স করতে ২ লাখ টাকা লাগবে। এসময় আমাকে বাবু চৌধুরী দোকানের বাইরে নিয়ে দুই দফায় একলাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা দিলে সে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স করে দিবে বলে জানায়। আমি এত টাকা দিতে পারব না বললে তারা টাকার জন্য আমার সাথে দর কষাকষির এক পর্যায়ে আমি তাদের ২০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হই। বাকি টাকা প্রতিমাসে ১ হাজার করে তার দেয়া বিকাশ নাম্বারে পাঠানোর জন্য বলে যায়।

১ জুন (মঙ্গলবার) দুপুর তিনটার দিকে প্রতারক বাবু চৌধুরী আবার আসলে আমি তাকে দোকানে বসতে দিয়ে বাইরে এসে পরিষদের সচিব, মেম্বারসহ আরো বেশ কিছু লোকজন জড়ো করলাম। এসময় সবাই এসে তার পরিচয় জানতে চাইলে সে নিজেকে বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা বলে দাবি করে।

তখন উপস্থিত লোকজন তাকে চার্জ করলে সে তার পকেটে থাকা দেশ বার্তা নামের একটা ভূয়া অনলাইন পত্রিকার আইডি কার্ড দেখায়। উপস্থিত জনতা তাকে আটকে রেখে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। রাত সাড়ে দশটার দিকে বেকারি মালিক রিফাত চৌধুরী বাদি হয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলা রজু করেন বাবু চৌধুরী ও আগুন চৌধুরী নামে দুইজনকে আসামি করে।

এ ব্যাপারে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, বাবু চৌধুরী নামের ভূয়া বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দানকারীকে খবর পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (২ জুন) সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামমিদের ধরার চেষ্টা চলছে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!