বিএমডব্লিউ-মার্সিডিজসহ চট্টগ্রামে নিলামে উঠছে ১৩০ বিলাসী গাড়ি

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া ১৩০টি বিলাসবহুল কারনেট গাড়ি ইলেকট্রনিক নিলামে (ই-অকশন) বিক্রি করবে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। নিলামের জন্য রাখা গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার, জাগুয়ার, লেক্সাস, মিৎসুবিসির মতো দামি ব্র্যান্ড। এসব বিলাসবহুল গাড়ির সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণের জন্য পুনরায় যাচাই-বাছাই শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কমিটি।

বিদেশি বিশেষ ব্যক্তিরা শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে স্বল্প সময় ব্যবহার করে নিজ দেশে যাওয়ার সময় তা আবার ফেরত নিয়ে যান। এই সুবিধা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। একেই কারনেট সুবিধা বলা হয়ে থাকে। এটি এক দেশের গাড়ি শুল্কমুক্তভাবে অন্য দেশে নিয়ে ব্যবহারের একটি বিশেষ সুবিধা।

কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, বিভিন্ন সময় ৩১৫টি গাড়ি কারনেট সুবিধার আওতায় বাংলাদেশে এসেছে। তবে এসব গাড়ির মধ্যে শর্ত অনুযায়ী অনেক গাড়িই পুনরায় রপ্তানি বা ফেরত নেওয়া হয়নি।

শুল্ক আইন অনুযায়ী, প্রবাসী, পর্যটক ও কূটনীতিকসহ বিশেষ শ্রেণির ব্যক্তিরা কারনেট সুবিধার আওতায় বিদেশ থেকে বিনা শুল্কে বাংলাদেশে গাড়ি নিয়ে আসতে পারেন। তবে বাংলাদেশ থেকে ফেরার সময় অবশ্যই গাড়িগুলো নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু অনেকেই ফেরত না নিয়ে কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে গাড়িগুলো এখানে বিক্রি করে দেন। এ বিষয়ে কাস্টমসের কড়াকড়ির কারণে কারনেটের আওতায় আনা অনেক গাড়ি বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নেননি সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে, চট্টগ্রাম বন্দরের বিপুল জায়গা দখল করে রাখা ওই ১৩০টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলাম প্রক্রিয়ায় বিক্রির জন্য গত ২৪ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বরাবর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে আবেদন করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৭ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস গোয়েন্দা ও নিলাম) সাদিয়া আফরোজ গাড়িগুলো ইলেকট্রনিক নিলামে (ই-অকশন) তোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত দেন।

কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা যায়, নিলামের জন্য রাখা গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার, জাগুয়ার, লেক্সাস, মিৎসুবিসির মতো দামি ব্র্যান্ড। কারনেট ডি প্যাসেজ সুবিধায় আনা অখালাসকৃত এসব গাড়ি নিলামের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে টেকনিক্যাল কমিটি। এর মাধ্যমে এসব গাড়ির প্রতিটির সংরক্ষিত মূল্য (শুল্ক-করসহ গাড়ির সম্ভাব্য দাম) নির্ধারণ করা হবে। পরে দিনক্ষণ ঠিক করে এ মাসের মধ্যেই নিলাম কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার উপ-কমিশনার মো. আল আমিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গাড়িগুলোর মাধ্যমে ই-অকশনও চাঙ্গা করা হবে। কারনেট সুবিধায় আনা ১৩০টি গাড়ি বিক্রির জন্য এর আগেও কয়েক দফা নিলাম অনুষ্ঠিত হলেও কাঙ্ক্ষিত দর পাওয়া যায়নি ফলে ওই নিলাম বাতিল করা হয়। ই-অকশনের ফলে প্রতিযোগিতামূলক দরও পাওয়া যাবে। গাড়িগুলোর বাজারদর যাচাইবাছাই করে পুনরায় ইনভেন্ট্রি করা হচ্ছে। এতে বর্তমান বাজারমূল্য পাওয়া যাবে। আবার কিছু গাড়ির দাম বেশি নির্ধারণ করা আছে, সেগুলোর মূল্যও বাজারের সঙ্গে মিলিয়ে নির্ধারণ করা হবে।

কাস্টমসের নিলাম শর্ত অনুযায়ী, যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিলামে অংশ নিতে পারবে। টেন্ডারে অংশ নেওয়ার সময় শিডিউলের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সনদ অথবা টিআইএন সার্টিফিকেটের কপি দাখিল করতে হবে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও টিআইএন সার্টিফিকেটের কপি দাখিল করতে হবে। প্রদত্ত কোটেশনের ১০ শতাংশ হারে ব্যাংক ড্রাফট অথবা পে-অর্ডার চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনারের অনুকূলে জমা দিতে হবে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!