বিএনপি নেতা গিয়াস কাদেরের ৩ বছর কারাদণ্ড

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি

বঙ্গবন্ধুর চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন কটূক্তি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও প্রদান করা হয়। অনাদায়ে আরও ৩ মাস জেল দেয়া হয়।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালত এ রায় দেন।

গত বছরে ৩০ মে ফটিকছড়ি থানায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৬০-৭০ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মহুরী।

মামলার বাদী নাজিম উদ্দিন মুহুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কেউ প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করলে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে আমরা চুপ থাকতে পারি না। তাই নিজের বিবেকের তাড়নায় আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আদালত গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীরকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন। অনাদায়ে আরও ৩ মাস জেল দেওয়া হয়েছে। এতে আমি সন্তুষ্ট।’

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি অতিরিক্ত পিপি সমির দাশগুপ্ত রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে মামলাটিতে (সিআর মামলা- ১৪৪/১৮, ফটিকছড়ি) সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। পরে ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ২৯ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘আপনার বাবার চেয়েও আপনার অবস্থা খারাপ হবে। আপনার বাবার মৃত্যুর পর যেমন ইন্নালিল্লাহ্ পড়ার লোক ছিল না, আপনার পরিণতি তার চেয়েও খারাপ হবে। আপনাকে বাবার চেয়েও নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে।’

এরআগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাড়ির মালামাল আইনত বাজেয়াপ্তকরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত বছরের ১০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগরের তৃতীয় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এ রায় দেন।

এছাড়া গত বছরের ৩ জুন শহিদুল্লাহ কায়সারের আদালতে ফটিকছড়ির তরিকত সভাপতি শাহজাদা বেলাল শাহ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে মোট ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান এম তৌহিদুল আলম বাবু, ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ও ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলাগুলো দায়ের করেন। এর মধ্যে দুটি মামলায় জামিনে রয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ভাই। গত সাংসদ নির্বাচনে ঋণখেলাপির ও দলীয় মনোনয়ন জমা না দেওয়ায় চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসন থেকে তার মনোয়ন বাতিল করা হয়। একই অভিযোগে তার পুত্র সামির কাদেরকেও চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের মনোনয়ন খোয়াতে হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!