বায়তুশ শরফের নতুন পীর মাওলানা আব্দুল হাই নদভী

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ দরবারের প্রধান দায়িত্বশীল (পীর) হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মাওলানা আব্দুল হাই নদভী। সদ্যপ্রয়াত পীর মাওলানা শাহ মোহাম্মদ কুতুব উদ্দীনের স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি।

শনিবার (২৩ মে) আসরের নামাজের পর চট্টগ্রামের দেওয়ানহাট ধনিয়ালাপাড়ায় কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ মসজিদে তাকে পীর হিসেবে ঘোষণা দেন বায়তুশ শরফ দরবারের অঙ্গ সংগঠন মজলিশে ওলামা বাংলাদেশ। তিনি বায়তুশ শরফ দরবারের চতুর্থ পীর।

বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন বায়তুশ শরফ দরবারের মুখপাত্র কাজী শিহাব উদ্দীন।

তিনি বলেন, মরহুম হুজুরে কেবলা কুতুব উদ্দীন হুজুরের ওফাতের পর বায়তুশ শরফের পীর হিসেবে মজলিশে ওলামা মাওলানা আব্দুল হাই নদভীকে পীর হিসেবে মনোনীত করেছেন। বাদ আসর তাকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়।

জানা যায়, শোকাহত দরবারের ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে বাদ আছর দোয়া মাহফিল শুরু হয়। এতে উপস্থাপনায় ছিলেন মাজলিসুল উলামা বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা মামুনুর রশীদ নূরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য আল্লামা শায়খ ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নিজামুদ্দিন নদভী, বায়তুশ শরফ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা ও সদ্যপ্রয়াত পীর আল্লামা শাহ মোহাম্মদ কুতুব উদ্দীনের শ্যালক ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার উপাচার্য প্রফেসর ড. আহসান উল্লাহ, পটিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইদ্রিস। এতে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন সদ্যপ্রয়াত পীর সাহেব হুজুরের একমাত্র পুত্র মাওলানা সালাহউদ্দিন বেলাল।

সভায় মাজলিসুল উলামা বাংলাদেশের মহাসচিব শায়খ মামুনুর রশীদ নূরী মাজলিসুল উলামা বাংলাদেশ এবং আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেন, মসজিদ বায়তুশ শরফের পরবর্তী খতীব নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করবেন মাজলিসুল ওলামা বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই নদভী। এছাড়াও আসন্ন ঈদের নামাজও তিনিই পড়াবেন। প্রতি বছরের মতো বায়তুশ শরফে অনুষ্ঠিত ২৯ রমজানের তাওবা এবং ইস্তেগফারও করাবেন মাওলানা আব্দুল হাই নদভী।

আব্দুল হাই নদভীর সংক্ষিপ্ত জীবনী
মাওলানা আব্দুল হাই নদভী চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নে ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বায়তুশ শরফের মরহুম পীর হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল জব্বার। ।

গ্রামের মক্তবে তিনি প্রাথমিক কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেন। সেনের হাট প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। পরে চুনতি হাকীমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েন। ইবতেদায়ী পাশ করেন (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী) কুমিরাঘোনা আখতারুল উলূম মাদ্রাসা থেকে। এছাড়া ১৯৮৩ সালে লোহাগাড়া বড়হাতিয়া এশাআতুল উলূম
মাদ্রাসা থেকে দাখিল, ১৯৮৫ সালে চুনতি হাকীমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম এবং ১৯৮৮ সালে একই মাদরাসা ফাজিল ও ১৯৯০ সালে থেকে কামিল পাশ করেন।

পরবর্তীতে ভারত উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (অনার্স) পাশ করেন। পরে ভারতের আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা হাদিস তত্ত্বের ওপর এমফিল করেন।

মাওলানা আব্দুল হাই নদভী থাইল্যান্ড, ভারত, সৌদি আরব, জর্দান, ইরাক, ফিলিস্তিন মায়ানমারসহ অনেক দেশ ভ্রমণ করেন।

তাঁর সম্পাদিত, রচিত, লিখিত, অনূদিত গ্রন্থসংখ্যা দুই শতাধিক। তিনি বাংলা, আরবি, উর্দু, ফার্সি, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী। এছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি ব্যাংকের শরীয়াহ বোর্ডের সদস্য তিনি।

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!