বাড়িভাড়ার দুশ্চিন্তায় চট্টগ্রামের ঘরবন্দি মানুষ

চোখের পলকে শেষ হয় ৩০ দিন মিলে একমাস। এই সময় চোখের ঘুম যেন উবে যায় অধিকাংশ ভাড়াটের। সাধারণত মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে গুণতে হয় ভাড়ার টাকা। এতে নির্দিষ্ট সময়ে এই ভাড়া জোগাড় করতে অনেক সময় হিমশিমও খেতে হচ্ছে অনেককে। চট্টগ্রামের অধিকাংশ ভাড়াটেরই এমন অবস্থা করোনার এই দুর্যোগকালে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গত একসপ্তাহ ধরে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন শ্রমজীবী ও চাকরিজীবী মানুষ। এতে হঠাৎ করে আয় ও রোজগার বন্ধ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভাড়াটেরা।

চট্টগ্রাম নগরীর বেশ কয়েকজন ভাড়াটের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, তাদের সবারই কর্মস্থল বন্ধ। নিজেরা হয়ে আছেন ঘরবন্দি। তাই আয়-রোজগারও নেই। মানবিক বিবেচনায় তারা বাড়ির মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, অন্তত মার্চ ও এপ্রিল মাসের ভাড়া যেন মওকুফ করা হয়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৬২ দশমিক ১৬ বর্গমাইলে লোকসংখ্যা বসবাস করেন প্রায় ৫৮ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ লোকই অন্যের ঘরে ভাড়ায় থাকেন।

এদিকে চট্টগ্রামের ভাড়াটেদের ভাড়া মওকুফের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, কনজজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, করোনায় স্বল্প, নিম্ন ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের আয় ও রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় চট্টগ্রামের ভাড়াটিয়ারা মাস শেষে এই বাড়িভাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। মানবিক বিবেচনায় অন্তত একমাসের ভাড়া মওকুফ করা হলে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের উপকার হবে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডেপুটি গর্ভনর আমিনুল হক বাবু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রামের যেসব দুর্বল ও শ্রমজীবী ভাড়াটিয়া, তাদের জন্য মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ রইল স্বাবলম্বী বাড়িওয়ালাদের প্রতি। একই সঙ্গে স্বাবলম্বী ভাড়াটিয়াদের প্রতি অনুরোধ এই মহামারী দুর্যোগে তাদের আয়ের একটি অংশ যেন কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের পেছনে ব্যয় করেন।

সম্প্রতি সিলেট সিটি করপোরেশনে বসবাসরত নিম্নমধ্যবিত্ত যেসব পরিবার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন তাদের একমাসের ভাড়া মওকুফ করার জন্য বাড়িওয়ালাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

সিলেটের মেয়র বলেন, বাসার মালিকরা যদি একমাসের ভাড়া মওকুফ করেন তাহলে সিটি করপোরেশন তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মাসের পানির বিল মওকুফ করবে। আর কেউ যদি এই দুর্দিনে মানুষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করেন তাহলে পরবর্তীতে সিটি করপোরেশন ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে। কোন্ বাসার মালিক পুরো ভাড়া আদায় করলেন সে তথ্য নেওয়া হবে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখার পর নেওয়া হবে যথাযথ ব্যবস্থা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!