বান্দরবানে মারমা জনগোষ্ঠীর জল উৎসব

নববর্ষের পরেই মারমাদের সাংগ্রাই উৎসবের সময়। বান্দরবানে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের এই বর্ষবরণ উৎসব। সাংগ্রাই উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো ‘মৈত্রী পানি বর্ষণ’ । মারমা তরুণ-তরুণীরা নানা রঙের ঐতিহ্যবাহী পোষাকে আসেন ছোট পাত্রে পানি নিয়ে, একে অপরকে পানি ছিটিয়ে শুদ্ধ করেন নিজেদের। শহরের অলিগলি ও পাহাড়ের দূর্গম এলাকাগুলোতে চলছে এই সামাজিক উৎসব ।

প্রতিবারের মত এবারও বান্দরবানের স্থানীয় রাজার মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করেছে উৎসব উদযাপন পরিষদ ।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম,পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদারসহ আদিবাসী নেতারা ।

মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি সাংবাদিকদের বলেন, এই উৎসব কোন নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য নয়। এ আনন্দ উৎসব সবার জন্য । আমাদের অসাম্প্রদায়িক চিন্তা ও সম্প্রীতির বন্ধন তা এতে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বোঝা যায়।

এছাড়াও স্থানীয় রাজার মাঠে মারমা জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতির গান আর নাচের আসর বসেছিল। শিশুদের কণ্ঠের গান আর নাচ উৎসবস্থলকে আরও প্রাণবন্ত করেছে । এ উৎসবে অংশ নিতে বান্দরবানে শত শত পর্যটক এসেছেন।

জল উৎসবে আসা বান্দরবানের উজানী পাড়ার তরুণী উসাইমে জানান, পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে আজ বরণ করে নিলাম । বন্ধুরা সবাই মিলে একে অপরকে পানি ছিটাই। মৈত্রী পানি বর্ষণের মাধ্যমে পুরাতন বছরটাকে মুছে ফেলি।

বান্দরবানে মধ্যম পাড়ার বাসিন্দা সিংম্রাই জানান ,পুরাতন যা কিছু আছে সব কিছু ধুয়ে মুছে ফেলার জন্য আমরা মূলক এই মৈত্রী পানি বর্ষণ করে থাকি ।

ঢাকার মিরপুর থেকে আসা সামিয়া জামান জানান, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বাঙালীদের অনুষ্ঠান অনেক দেখেছি। ভিন্ন কিছুর জন্য এখানে এসেছি। এখানে পানি খেলাটা অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আশা করি এর মাধ্যমে আমাদের সব পাপ আছে মুছে যাবে ।

এদিকে উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কোকোচিং মার্মা জানান, সাংগ্রাইকে ঘিরে এবার চারদিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে জেলা সদরে উৎসব উদযাপন নুষ্ঠানের ইতি টানা হবে । কিন্তু পাহাড়ের উপজেলাগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই উৎসব উদযাপন করা হবে আরো কিছু দিন ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!