বান্দরবানে পাহাড়ধসে দুজনের মৃত্যু, পাহাড়ি ঢলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

বান্দরবানে ভারী বর্ষণে চিম্বুক ও লামা এলাকায় পাহাড়ধসে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই) চিম্বুক পাহাড়ে ক্রামাদি পাড়ায় এক জুম চাষী এবং রোববার (১৪ জুলাই) লামার মধুঝিরি আগা এলাকায় এক বৃদ্ধা মারা যান।

লামায় পাহাড়ধসে রোববার (১৩ জুলাই) দিবাগত রাত দুইটার দিকে নূরজাহান বেগম (৫৫) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি লামা সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মধুঝিরির আগা এলাকায়। এ সময় চারজন আহত হন। এর আগে শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ক্রামাদি পাড়ায় জুম চাষি মেনফং মেনফং ম্রোর (৩৫) লাশ উদ্ধার করা হয়।

বিভিন্ন জায়গাতে পাহাড়ধসের কারণে সারা দেশের সঙ্গে সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বিভিন্ন জায়গাতে পাহাড়ধসের কারণে সারা দেশের সঙ্গে সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, বাড়ির ওপর পাহাড় ধসে পড়লে নূরজাহান, তার ছেলে ও পুত্রবধূ মাটিচাপা পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে মাটির নিচ থেকে মৃত অবস্থা নূরজাহানকে উদ্ধার করে। পরে আহত অবস্থায় নূরজাহানের ছেলে ইরান ও পুত্রবধূ ফাতেমাকে উদ্ধার করে লামা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে বৃহস্পতি ও শুক্রবারের পর শনিবার আবার টানা বৃষ্টি শুরু হলে বান্দরবানের নদী তীরবর্তী স্থান এবং নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাঙ্গু নদীর উজানের বৃষ্টিতে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বান্দরবান শহরের শেরেবাংলা নগর, আর্মিপাড়া, ইসলামপুর, ফায়ার সার্ভিস এলাকা ও বালাঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকা ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অতিবৃষ্টির কারণে রোববার রাত তিনটার দিকে মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিতীয়বারের মত লামা প্লাবিত হয়ে পড়ে।

এ দিকে টানা বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যাবার কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক ডুবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও কোনো যানবাহন চলছে না। লামা-আলীকদম-ফাঁসিয়াখালী সড়কের বিভিন্ন জায়গাতে পাহাড়ধসের কারণে সারা দেশের সঙ্গে সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ড বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পৌরসভার ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী।

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে জান্নাত রুমি বলেন, আকস্মিক এই বন্যায় উপজেলার ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত পানি না নামায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বান্দরবান সদর ও লামা উপজেলার পাঁচ হাজারেরও বেশি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!